রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় এক মাসের ব্যবধানে একই প্রতিষ্ঠানে দুই দফা গুলির ঘটনায় আতঙ্কের মধ্যে আছে এলাকাবাসী। ঘটনার পর থেকেই জীবনের নিরাপত্তায় ঘরবন্দি হয়ে আছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও তার পরিবারের সদস্যরা। প্রথম দফার ঘটনায় জড়িত জাভেদ নামে একজনকে অস্ত্র ও ব্যবহৃত মোটরসাইকেলসহ গ্রেপ্তারের পরও দ্বিতীয় দফায় ফের গুলির ঘটনা স্থানীয়দের মাঝে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। যদিও তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্বিতীয় দফায় হামলাকারীরাও একই গ্রুপের সদস্য। তবে গতকাল পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিষয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান এ প্রতিবেদককে বলেন, ঘটনাস্থলের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি ফুটেজ) দেখে ব্যবসায়ী মনিরের বাসায় হামলাকারী দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তারা পেশাদার সন্ত্রাসী দলের সদস্য। একজন শীর্ষ সন্ত্রাসীর হয়ে মাঠে কাজ করছে এমন তথ্য পেয়েছি। দ্বিতীয় দফায়ও একই গ্রুপের সদস্যরা জড়িত বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। তবে প্রতিটি তথ্যই যাচাই-বাছাই চলছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশও এ ঘটনায় কাজ করছে। গতকাল টাউন হলসংলগ্ন শেরশাহ শূরী রোডের ব্যবসায়ী ভুক্তভোগী মনির হোসেন বলেন, ‘ওরা আমাকে বিপুল অঙ্কের চাঁদা দাবি করে দুই দফা হত্যার হুমকি দিয়েছে। বাসায় এসে গুলি করেছে। এখন পরিবার নিয়ে অনেকটা গৃহবন্দি হয়ে আছি। সন্ত্রাসীরা একের পর এক হুমকি দিচ্ছে। চাঁদা চাচ্ছে। থানায় মামলা করেছি। এরা গ্রেপ্তার না হলে এভাবে কতদিন পরিবার নিয়ে আতঙ্কে কাটাতে হবে জানি না।’
জানা গেছে, প্রথম দফায় গুলির ঘটনার সময় ব্যবসায়ী মনির হোসেন বাসায় না থাকলেও গত সোমবারের ঘটনার সময় তিনি বাসার নিচ তলাতেই ছিলেন। তখন সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে এক রাউন্ড গুলি করে চলে যায়। গুলির ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
গত ২৪ মার্চ ওই ব্যবসায়ীর বাসার নিচ তলায় দুই সন্ত্রাসী ঢুকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জাভেদ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল জব্দ করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে তার কাছ থেকে ঘটনায় ব্যবহৃত ৭.৬২ বোরের একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে নিজেকে একটি সন্ত্রাসী দলের সদস্য বলে দাবি করেছে। সহযোগী আরও অনেক সন্ত্রাসীর নামও বলেছে সে।
একাধিক সূত্র বলছে, স্বৈরাচার হাসিনা সরকার পরিবর্তনের পর মোহাম্মদপুর এলাকায় উঠতি সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বেড়েছে যাদের বেশির ভাগই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। একাধিক শীর্ষ সন্ত্রাসী তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। তাদের কাছে ৫ আগস্টে থানা লুটের অস্ত্রও আছে বলে অভিযোগ রয়েছে।