গাজীপুরে ছেলে শিশু-কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগে গ্রেপ্তার ইমাম কারাগারে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। রবিবার দিবাগত রাতে গাজীপুর জেলা কারাগারে তার মৃত্যু হয়। নিহত ইমাম রইজ উদ্দিন (৩২) কুমিল্লার মতলব থানার বাদশা মিয়ার ছেলে। তিনি গাজীপুর সিটির হায়দরাবাদ আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব। রবিবার সকালে হায়দরাবাদ এলাকার এক কলেজছাত্রকে বলাৎকারের চেষ্টার অভিযোগে ইমাম রইজ উদ্দিনকে আটক করে গাছে বেঁধে গণপিটুনি দেয় এলাকাবাসী। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠায়।
পূবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমিরুল ইসলাম জানান, ছেলে শিশু ও কিশোরদের ধর্ষণের অভিযোগে রবিবার এলাকাবাসী হায়দরাবাদ আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব রইজ উদ্দিনকে আটক করে। পরে উত্তেজিত জনতা তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে গণপিটুনি দেয়। এ সময়ে তার গলায় জুতার মালা পরানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ রইজ উদ্দিনকে উদ্ধার করে ওই মামলার বিপরীতে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলেদের সঙ্গে ইমাম রইজ উদ্দিন চলাফেরা বেশি করতেন। ছেলেদের ডেকে নিয়ে তার থাকার ঘরে কম্পিউটার এবং মোবাইলে গেমস খেলতে দিত ও দোকান থেকে কোমল পানীয় এনে পান করাতেন। ওই পানিও পান করার পর বাচ্চারা অচেতন হয়ে যেত। এরপর রইজ উদ্দিন তাদের বলাৎকার করত। সম্প্রতি স্থানীয় এক কলেজছাত্রকে রাতে ইমাম রইজ উদ্দিন তার কাছে ঘুমাতে ডেকে নিয়ে যায়। পরে ওই ছাত্রকে পাওয়ার নামের একটি কোমল পানীয় পান করতে দেয়। ওই পানি পান করার পর ওই কলেজছাত্রের মাথা ঘুরাতে থাকে। পরে কৌশলে প্রস্রাবের কথা বলে বের হয়ে তার পরিবারকে ফোনে বিষয়টি জানায়। বিষয়টি জানাজানি হলে রবিবার এলাকার লোকজন রইজ উদ্দিনকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
গাজীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের জানান, রইজ উদ্দিনের শরীরে গণপিটুনির চিহ্ন ছিল। রবিবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে তিনি কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেলে নেওয়া হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।