যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ৩৬৩ জন কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাজেট ঘাটতির কারণে এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। এর পেছনে মূল কারণ দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত ফেডারেল নীতিতে পরিবর্তন।
বিশ্ববিদ্যালয়টির এক মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানান, স্ট্যানফোর্ড বাজেট সংকোচনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। গত সপ্তাহে বিভিন্ন স্কুল ও ইউনিটে মোট ৩৬৩টি পদে ছাঁটাই হয়েছে।
এর আগে ২০২৫ সালের জুন মাসে স্ট্যানফোর্ড জানায়, আসন্ন অর্থবছরের জন্য ১৪ কোটি ডলার বাজেট কমিয়েছে তারা। এর পেছনে প্রধান কারণ ছিল ফেডারেল নীতির পরিবর্তনে সৃষ্ট কঠিন আর্থিক পরিস্থিতি।
ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি এমন কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেডারেল তহবিল বন্ধ বা স্থগিত করেছে, যেখানে প্রো-প্যালেস্টাইন (ফিলিস্তিনপন্থী) বিক্ষোভ, জলবায়ু পরিবর্তন কার্যক্রম, লিঙ্গ পরিচয় বিষয়ক নীতিমালা ও বৈচিত্র্য-সমতা উদ্যোগ পরিচালিত হচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে, ক্যালিফোর্নিয়ার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলস (ইউসিএলএ)-এর ৩৩০ মিলিয়ন ডলারের তহবিল গত সপ্তাহে স্থগিত করে ট্রাম্প প্রশাসন। অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়টি ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইহুদি ও ইসরায়েলি শিক্ষার্থীদের জন্য সহিংস পরিবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে।
এছাড়া, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে ২২০ মিলিয়ন ডলার এবং ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়কে ৫০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি করানো হয়েছে। উভয় প্রতিষ্ঠানই সরকারের কিছু শর্ত মেনে নিয়েছে। তবে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এখনো আলোচনায় রয়েছে সরকার।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, সরকারের এমন পদক্ষেপে একাডেমিক স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকার হুমকির মুখে পড়েছে। অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি—বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের নামে ঘৃণাবাদ বা বিদ্বেষপূর্ণ কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দিচ্ছে।
তবে, বিক্ষোভকারীরা বলছেন, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক হামলা ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সমালোচনা করাকে সরকার ভুলভাবে ‘বিরোধিতা’ বা ‘চরমপন্থা’র সঙ্গে মিলিয়ে দেখছে, যা স্বাধীন মতপ্রকাশের পরিপন্থী।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল