সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আয়ারল্যান্ড সিরিজেই বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলার বিরল কীর্তি গড়বেন মুশফিকুর রহিম। চলতি মাসে আইরিশদের বিপক্ষে দুই টেস্ট ম্যাচ সিরিজ। ১১-১৫ নভেম্বর প্রথম টেস্ট সিলেটে এবং ১৯-২৩ নভেম্বর দ্বিতীয় টেস্ট মিরপুরে। মুশফিক ‘হোম অব ক্রিকেট’ মিরপুরে খেলবেন শততম টেস্ট। ইতিহাস লেখার আগে মুশফিক জাতীয় ক্রিকেট খেলে প্রস্তুতিটা সেরে নিচ্ছেন। সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন। তিন অঙ্কের জাদুকরী রান করে বুনো উচ্ছ্বাসে মেতেছেন। পাগলাটে, খ্যাপাটে উদ্যাপন করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মুশফিককে সব সময়ই এমন খ্যাপাটে উদ্যাপন করতে দেখা যায়। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে যা বিরল। গতকাল সিলেটে সেই পাগলাটে উদ্যাপনই করেছেন। সেঞ্চুরির বলটির লেন্থ ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। লম্বা ভার্সানের ম্যাচে বলটি সাধারণত ছেড়ে দেন ব্যাটাররা। শর্টার ভার্সানে স্কয়ারে খেলেন। কিন্তু মুশফিক সে পথে না হেঁটে স্কুপ করার পজিশনে চলে যান। এরপর দারুণভাবে স্কুপ করেন। বল উইকেটরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে সীমানা দড়ি পার হয়। বাউন্ডারিতে সেঞ্চুরি। সেঞ্চুরি করেই মুশফিক একঝলক দেখেন পেসার এনামুল হককে। এরপর হুঙ্কার করে মুষ্টিবদ্ধ হাত ছুড়েন বাতাসে। সেঞ্চুরির উচ্ছ্বাসে আকাশপানে উঁচিয়ে ধরেন ব্যাট এবং হেলমেট। ৩৮ বছর বয়সি মুশফিক প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে ১৯টি সেঞ্চুরি করেছেন। তার সেঞ্চুরির ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ড্র হয়েছে। জাতীয় ক্রিকেটের ২৭তম আসরে ড্র হয়েছে ময়মনসিংহ-রংপুর এবং চট্টগ্রাম-বরিশাল ম্যাচ। তৃতীয় দিনে জিতেছে রাজশাহী। খুলনাকে হারিয়েছে ৭ উইকেটে।
তৃতীয় দিন মুশফিক শেষ করেছিলেন ৯৩ রানে অপরাজিত থেকে। সেঞ্চুরি থেকে ৭ রান পিছিয়ে গতকাল খেলতে নামেন। একই সঙ্গে লড়াকু মানসিকতায় তুলে নেন সেঞ্চুরি। অবশ্য তাইবুর রহমানের বলে বোল্ড হন ব্যক্তিগত ১১৫ রানে। ২০৫ বলের ইনিংসটিতে ৮টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন মুশফিক। সাবেক টেস্ট অধিনায়কের সেঞ্চুরিতে সিলেট ২৯০ রান করে প্রথম ইনিংসে। ঢাকা প্রথম ইনিংসে ৩১০ রান করেছিল। ২০ রানে এগিয়ে ঢাকা ২ উইকেটে ২২২ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে। ওপেনার জিশান আলম ওয়ানডে স্ট্রাইল ব্যাটিংয়ে ৯৪ রান করেন ১২৫ বলে ৯ চার ও ৪ ছক্কায়। স্বাগতিক সিলেটকে ২৪৫ রানের টার্গেট দেয় ঢাকা। স্বাগতিকরা বিনা উইকেটে ১৩ রান তোলার পর আম্পায়ারদ্বয় ম্যাচ ড্র ঘোষণা করেন।
কক্সবাজার ক্রিকেট একাডেমি মাঠে ড্র হয়েছে ময়মনসিংহ-রংপুর ম্যাচ। মাহফিজুর রহমান, মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও আবুদল মজিদের সেঞ্চুরিতে ময়মনসিংহ ৬ উইকেটে ৫৫৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। শহীদুল ইসলাম ও আরিফ আহমেদের মারাত্মক বিধ্বংসী বোলিংয়ে রংপুর ১২৭ রানে গুটিয়ে যায়। ফলোঅনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ায় রংপুর। দিন শেষ করে ২ উইকেটে ১১২ রান তুলে। দলটির পক্ষে আবদুল্লাহ আল মামুন অপরাজিত থাকেন ৬৯ রানে। কক্সবাজার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ড্র হয়েছে চট্টগ্রাম ও বরিশাল ম্যাচ। ওপেনার সাদিকুর রহমানের সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে চট্টগ্রাম ৩৫৮ রান করে। সাদিকুর ১২২ ও মুমিনুল হক ৯২ রান করেন। সালমান হোসেন ইমনের অপরাজিত ১২০ রানে ভর করে বরিশাল প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেটে ২৫৯ রান করে। ৯৯ রানে এগিয়ে চট্টগ্রাম বিনা উইকেটে ৩৫ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে। ১৩৪ রানের টার্গেটে ৯ ওভারে বিনা উইকেটে ১৯ রান করে।
