অবহেলা-উদাসীনতায় খুলনা বিভাগীয় স্টেডিয়ামে গ্যালারি-দেয়ালে বট-পাকুড়ে বসতি গেঁড়েছে। গ্যালারির সিঁড়িতে শেওড়ার আস্তরণ। সেখানে বেড়ে উঠেছে আগাছা। রোদ-বৃষ্টির সঙ্গে লড়াই করা বিবর্ণ চেয়ারগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ব্যবহার অনুপযোগী ইলেকট্রনিকস স্কোর বোর্ড, মিডিয়া বক্স, প্যাভিলিয়ন ভবন, সাইড স্ক্রিন ও মরচে ধরা নিরাপত্তা বেষ্টনী লোহার গ্রিলগুলো জরাজীর্ণ স্টেডিয়ামের সাক্ষ্য বহন করছে।
জানা যায়, ২০১৬ সালের ৫ এপ্রিল কালবৈশাখি ঝড়ে ভেঙে যায় স্টেডিয়ামের জায়ান্ট স্ক্রিন, সাইড স্ক্রিন, পূর্ব ও পশ্চিম পাশের প্রেস বক্স, ভিআইপি বক্স, গ্যালারিসহ বেশ কিছু স্থাপনা। এরপর আর সেগুলোর সংস্কার করা হয়নি। সংস্কার না করায় গ্যালারির চেয়ার প্যাভিলিয়ন সেড নষ্ট হয়ে গেছে। তবে এ বিষয়গুলো নিয়ে মুখ খুলতে চান না ভেন্যুর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, স্টেডিয়ামটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে। নষ্ট হয়ে গেছে দামি সব সরঞ্জামাদি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ স্টেডিয়ামটির অধিকতর উন্নয়নের জন্য ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি বড় ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করে। ওই বছরের ১৭ জুলাই প্রকল্পের যাচাই-বাছাই কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয় ফিজিবিলিটি স্টাডি করার। কিন্তু দীর্ঘদিনে সেই কাজ শেষ হয়নি। জানা যায়, ২০০৬ সালে স্টেডিয়ামটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেলার অনুমোদন পায়। ওই বছর এখানে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ টেস্ট অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালে, পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছিল বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয়েছে সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২২ জানুয়ারি। জিম্বাবুয়ে-বাংলাদেশ সিরিজের চারটি টি-২০ ম্যাচ হয়েছিল। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটে শীর্ষ পর্যায় থেকে বয়সভিত্তিক নানা প্রতিযোগিতা হয়েছে এখানে।
ক্রীড়া সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১৬ সালের ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষত এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে স্টেডিয়ামটি। দিনে দিনে ক্ষতিগ্রস্ত স্টেডিয়াম আরও জরাজীর্ণ হয়েছে। অবহেলা-উদাসীনতায় বিভাগীয় স্টেডিয়াম এখন মৃতপ্রায়।
বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সচিব আবুল হোসেন বলেন, অবকাঠামোগত বড় ধরনের সংস্কার ছাড়া এখানে আন্তর্জাতিক মানের ম্যাচ আয়োজন সম্ভব নয়। স্টেডিয়ামটি সংস্কারের জন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সংস্কারের জন্য প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। তবে কবে সংস্কার কাজ শুরু হবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়।