পরিচিত ভেন্যু সিলেটে বছরের প্রথম টেস্ট খেলবেন নাজমুলরা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাদা পোশাক ও লাল বলের ম্যাচ খেলতে নামার আগে নতুন ক্রিকেট খেলার বার্তা দিয়েছিলেন টাইগার অধিনায়ক নাজমুল। সিলেটের পরিচিত উইকেটে বার্তার ঠিক বিপরীত ক্রিকেটটাই খেলেন নাজমুলরা। ফল একদিন আগেই হার। সফরকারী জিম্বাবুয়ের বোলিংয়ের বিপক্ষে লড়াই করতে ব্যর্থ নাজমুল বাহিনী ৩ উইকেটে হেরে পিছিয়ে পড়েছে সিরিজে। অথচ চতুর্থ দিনের বিকাল পর্যন্ত মেহেদি মিরাজের রেকর্ড গড়া বোলিংয়ে টেস্টে জয়ের পথেই ছিল টাইগাররা। কিন্তু দুই দুটি সহজ ক্যাচ মিসের খেসারত গুনতে হয়েছে টাইগারদের। আফ্রিকান প্রতিনিধিদের কাছে ২০১৮ সালের পর ফের টেস্ট হেরেছে নাজমুল বাহিনী। সাত বছর আগে টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের ভেন্যু হিসেবে অভিষেক হয়েছিল। অভিষেক টেস্টটিতে জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছিল। এবার সুযোগ ছিল প্রতিশোধের। ব্যর্থ হয়েছেন নাজমুলরা। একদিন আগে টেস্ট হেরে পুুরোপুরি হতাশ হয়েছেন টাইগার অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই হতাশার। পুরো ম্যাচটা যদি বিশ্লেষণ করি, আমরা খুব একটা ভালো ক্রিকেট খেলিনি। যার কারণেই ম্যাচ হেরেছি। অতিরিক্ত হতাশার এটা আসলে বলব না। এটা একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল। আপসেট। ভালো করিনি। এতটুকুই।’ দুই টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট চট্টগ্রামে ২৮ এপ্রিল-২ মে।
টেস্ট হেরে হতাশ টাইগার অধিনায়ক। হতাশার ম্যাচে বল হাতে আলো ছড়িয়েছেন মেহেদি মিরাজ। টাইগারদের সহ-অধিনায়ক একজন অফ স্পিন অলরাউন্ডার। ব্যাটিং দুই ইনিংসে ১ ও ১১ রান করেন। কিন্তু বোলিংয়ে উজ্জ্বল। প্রথমটির পর দ্বিতীয় ইনিংসেও নেন ৫ উইকেট। প্রথম ইনিংসে তার স্পেল ২০.২-৫-৫২-৫ এবং দ্বিতীয় ইনিংসের স্পেল ২০.১-৮-৫০-৫। ১০ উইকেট নিয়ে টাইগার স্পিনার তৃতীয় টাইগার বোলার হিসেবে টেস্টে ২০০ উইকেটের মাইলফলক গড়েন। তার উইকেট সংখ্যা ৫২ টেস্টে ২০০টি। সাকিব আল হাসানের উইকেট ৭১ টেস্টে ২৪৬ এবং আরেক বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের উইকেট ৫২ টেস্টে ২১৯টি। সাকিব ৭১ টেস্টে ১৯ বার ৫ বা ততোধিক উইকেট নিয়েছেন। তাইজুল ১৫ বার এবং মিরাজ ১২ বার নিয়েছেন। সাকিব ও তাইজুল টেস্টে ১০ বা ততোধিক উইকেট নিয়েছেন দুবার। মিরাজের সংখ্যা তিন। ২০১৬ সালে প্রথম টেস্টে ১০ বা ততোধিক উইকেট নেন মিরাজ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুরে টাইগার সহ-অধিনায়কের টেস্ট বোলিং স্পেল ছিল ৪৯.৩-৪-১৫৯-১২ এবং ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মিরপুর তার স্পেল ছিল ৩৬-৩-১১৭-১২। এবার সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তার বোলিং স্পেল ৪২.৩-১০-১০২-১০।
সিলেটে জয়ের আগের ১০ টেস্টে কোনো জয় ছিল না জিম্বাবুয়ের। হার ৮ ও ড্র ২টি। গতকাল টার্গেট ছিল ১৭৪ রান। দেশটি নিজেদের ১৫২ টেস্ট ইতিহাসে এত রান তাড়া করে কখনো জেতেনি। ১৯৯৮ সালে পেশওয়ারে সর্বোচ্চ ১৬২ রান তাড়া করে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটে জিতেছিল জিম্বাবুয়ে। আফ্রিকান প্রতিনিধিরা সাত বছর পর বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট জিতল এবং চার বছর পর জিতল টেস্ট। ২০২১ সালে দেশটি আবুধাবিতে হারিয়েছিল আফগানিস্তানকে। রোমাঞ্চ ছড়ানো টেস্টটি হারলেও দুই স্পিনার মিরাজ ও তাইজুল ভালো বোলিং করেছেন। দুই স্পিনারের প্রশংসা করেছেন টাইগার অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘মিরাজ ও তাইজুল ভাই অসম্ভব ভালো বোলিং করেছে। বোর্ডে এ রকম রান (১৭৪) থাকার পরও ওরা যেভাবে চেষ্টা করেছে, সেটাকে ক্রেডিট দিতে হবে। আমার কাছে মনে হয় বোর্ডে এনাফ রান ছিল না।’ প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৫ রান করেছে নাজমুল বাহিনী। এ ম্যাচ হারায় খারাপ লাগছে টাইগার অধিনায়ক, ‘বেশি বলব না। যে কোনো ম্যাচ হারলেই খারাপ লাগে। অবশ্যই আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি।’
আমরা বিশ্বাস করি এর থেকেও ভালো খেলার মতো দল। এজন্য হতাশ। অনেক বেশি হতাশ এই ম্যাচটা হেওে, বিষয়টা এ রকম না। নরমালি ম্যাচ হারলে যেরকম খারাপ লাগে আজকে তেমনই লাগছে।’