ক্রীড়াঙ্গনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি ফিরিয়ে আনতে ফেডারেশনগুলোয় রদবদল হচ্ছে। পতিত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিতে বন্দি ছিল ক্রীড়াঙ্গন। অনিয়মের সাগরে পরিণত হয়েছিল। রাজনৈতিক প্রভাবে অযোগ্যরাই গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারে বসে ছিলেন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর খেলাধুলায় গতি ফিরিয়ে আনতে ফেডারেশনগুলোয় রদবদল চলছে। যোগ্যদের হাতে দায়িত্ব তুলে দিতে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। অ্যাডহক কমিটি গঠনের পর প্রকৃত যোগ্যরা কি দায়িত্ব পাচ্ছেন? এ নিয়ে চলছে আলোচনা। এরই মধ্যে আবার নতুনভাবে গড়া ফেডারেশনগুলোর কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ ক্রীড়াপ্রেমীরা। পতিত আওয়ামী সরকার আমলে দেশের অন্যতম বড় ফেডারেশন হকির কর্মকা নিয়ে অস্থিরতা ও বিতর্কের শেষ ছিল না।
বিতর্কিত মুমিনুল হক সাঈদ অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে দুর্নীতি ও দুষ্টচক্রের আস্তানা গড়ে তোলেন। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কেউ সাহসই পেতেন না। সাঈদের নেতৃত্বে ফেডারেশনে যা খুশি তা-ই হয়েছে। হকি হয়ে পড়েছিল একনায়কতন্ত্র। আওমামী সরকারের পতনের পর সাঈদ পলাতক। বিতর্কিত নির্বাচিত কমিটি ভেঙে দিয়ে অ্যাডহক কমিটি গঠন হয়েছে। এর পরও কি সুস্থ পরিবেশ ফিরে এসেছে? বরং যা চলছে তাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জাতীয় দল গঠনে এক সিদ্ধান্তের ইস্যু নিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে রীতিমতো বিতর্কের ঝড় বয়ে যাচ্ছে। যা বিশ্ব হকিতে কখনো হয়নি তা করতে গিয়ে বিতর্কে পড়ে গেছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। জাতীয় দল গঠন করতে ৫৭ খেলোয়াড়কে কুপার টেস্টের জন্য ডাকা হয়েছে। মূলত এরাই থাকবেন প্রাথমিক স্কোয়াডে। এখানে দেশের অভিজ্ঞ ও তারকা খেলোয়াড় রাসেল মাহমুদ জিমিকে না ডাকা নিয়েই যত কথা। জিমি এখনো দেশের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। জাতীয় দলে তাঁর বিকল্প তৈরি হয়নি। অথচ ফেডারেশনের বর্তমান কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে অলিখিত সিদ্ধান্ত নেয় যাদের বয়স ৩১-ঊর্ধ্ব তাদের আর জাতীয় দলে খেলার সুযোগ নেই।
বিশ্বে খেলোয়াড়রা জাতীয় দলে খেলেন পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে। এ অদ্ভুত নিয়ম চালু করায় জিমির আর জাতীয় দলে খেলার সুযোগ নেই। জিমির বয়স এখন প্রায় ৩২। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক ওঠায় ক্রীড়া পরিষদও নড়েচড়ে বসেছে। ৫৭ জনকে ডাকা হয়েছে অথচ এ তালিকায় দেশের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়কে ডাকা হয়নি। এতে হতবাক ক্রীড়া পরিষদ। গত সোমবার পরিষদের সচিব আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি চিটি ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে জিমিকে কেন কুপার টেস্টে ডাকা হয়নি। তা ছাড়া পারফরম্যান্স থাকার পরও কীসের ভিত্তিতে কোনো খেলোয়াড় জাতীয় দলে খেলতে পারবেন না তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে। চিঠি পাওয়ার পর ফেডারেশন কী করবে তা জানা যায়নি।