ফুটবল উন্নয়নে কোনো ভূমিকা নেই মাহফুজা আক্তার কিরণের। তার পরও দীর্ঘ সময় ধরে কমিটি ফর ওমেন্স ফুটবলের চেয়ারপারসনের দায়িত্বে আছেন। ২০০৮ সাল থেকেই বাফুফের নির্বাহী কমিটিতে আছেন। কিরণ বারবার কার প্রভাবে নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসছেন তা কারও অজানা নয়। ১৬ বছর ধরে কিরণের বিরুদ্ধে যে অনিয়ম ও অভিযোগ জমেছে, তাতে অনেকেই ভেবেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন না। কাজী সালাউদ্দিনের মতো নীরবে সরে যাবেন। সবাইকে অবাক করে কিরণ শুধু নির্বাচনই করেননি, জয়ীও হয়েছেন। তাঁর মতো বিতর্কিত কর্মকর্তা কীভাবে ফেডারেশনে বারবার জায়গা করে নিচ্ছেন সেটাই প্রশ্ন।
অনেকের ধারণা, কাজী সালাউদ্দিনের প্রশ্রয় বা সহযোগিতায় বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে এসেছেন তিনি। নারী কমিটির চেয়ারম্যান হয়েও নারী ফুটবলারদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতেন। ভাবখানা ছিল তাঁর মতো যোগ্য আর কেউ নেই। আওয়ামী আমলে জেলও খেটেছিলেন। তার পরও সালাউদ্দিন যতদিন ছিলেন তাঁকে পাশেই রেখেছেন। এজন্য কাউকে পাত্তা দেননি কিরণ। যা হোক, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর ছিলেন বলেই কিরণ অনিয়মের স্বর্গ গড়েছিলেন। অবাক লাগে বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার দেশ পরিচালনার পরও কিরণের প্রভাব আগের মতোই রয়েছে। কোনো পরিবর্তন নেই। কোনোভাবেই নিয়ম মানতে চান না। যাক, বিতর্কিত হলেও তাঁর দায়িত্ব নারী দলের দেখাশোনা করা। অন্য জায়গায় তাঁর নাক গলানোর সুযোগ নেই। কিরণ এবার যা করেছেন তাতে ফুটবল অঙ্গনে ধিক্কার পড়ে গেছে। প্রশ্ন উঠেছে- কোন ক্ষমতায় তিনি তা করছেন?
আজ বাফুফে ভবনে কিরণ বৈঠক ডেকেছেন। বৈঠক বা আলোচনা তিনি করতেই পারেন। কিন্তু কীভাবে কিরণ পেশাদার লিগে অংশ নেওয়া ক্লাব প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করতে বৈঠক ডাকেন। এ এখতিয়ার কি তাঁর আছে? পেশাদার লিগের জন্য আলাদা কমিটি রয়েছে। এখানে বৈঠক ডাকার অধিকার তো শুধু কমিটি চেয়ারম্যানের রয়েছে। কিরণ এ কমিটির কে? জানা গেছে, পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান বা অন্য সদস্যরাও জানেন না কিরণের বৈঠকের কথা। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে- কিরণ কাউকে না জানিয়ে বৈঠক ডাকেন কীভাবে? এর পেছনে কি কোনো ষড়যন্ত্র কাজ করছে?
ইমরুল হাসান শুধু পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান নন। তিনি ফেডারেশনের সিনিয়র সহসভাপতি। যাকে নির্বাহী কমিটি দ্বিতীয় ব্যক্তি বলা হয়। তিনি যখন বৈঠকের কথা জানেন না তখন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইমরান তুষারের কি উচিত ছিল না বিষয়টি সিনিয়র সহসভাপতিকে জানানো। নাকি ইচ্ছা করে চেপে গেছেন। নতুন কমিটি ফুটবল উন্নয়নে নানা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে। এ সময় কিরণের এ বৈঠক ডাকা ফুটবলকে হযবরল অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার আভাসই পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়টি ফেডারেশনের সভাপতি তাবিথ আউয়াল কিভাবে দেখবেন?