স্ট্রিং তত্ত্বের (String Theory) প্রথম পর্যবেক্ষণভিত্তিক প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। এটি এমন এক তত্ত্ব যা কোয়ান্টাম বলবিদ্যা (quantum mechanics) এবং আপেক্ষিকতাবাদ (general relativity)-এর মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করে। নতুন এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলছেন, ক্ষুদ্রতম স্তরে স্থান-কাল (space-time) এমনভাবে আচরণ করে যা দীর্ঘদিন ধরেই স্ট্রিং তত্ত্বে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল।
গবেষকরা বলছেন, মহাবিশ্বের সম্প্রসারণে যে অদৃশ্য শক্তি কাজ কর (ডার্ক এনার্জি) তার প্রভাব সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমছে। এই ধারণা মিলেছে ‘ডার্ক এনার্জি স্পেক্ট্রোস্কোপিক ইন্সট্রুমেন্ট’ (DESI)-এর সাম্প্রতিক তথ্য বিশ্লেষণ থেকে। গবেষণা-সহলেখক ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সানিওল্ড ওয়েস্টবেরির অধ্যাপক মাইকেল ক্যাভিক বলেন, ‘আমাদের কাজের আলোকে বলা যায়, DESI-এর ফলাফল স্ট্রিং তত্ত্বে প্রথম পর্যবেক্ষণভিত্তিক প্রমাণ হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ধরে নিয়েছিলাম, মহাবিশ্বের কিছু মৌলিক ধর্ম চিরস্থায়ী। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, হয়তো সেগুলো সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হচ্ছে।
স্ট্রিং তত্ত্ব কী?
১৯৬০–৭০ এর দশকে এই তত্ত্ব প্রথম আলোচনায় আসে। এই তত্ত্ব বলে যে, ইলেকট্রন বা কোয়ার্কের মতো কণা আসলে একেবারে ক্ষুদ্রাকৃতির দড়ি (string)-এর মতো। এই দড়িগুলো কাঁপে, আর সেই কাঁপনের ধরন অনুযায়ী কণার ধরন নির্ধারিত হয়। তবে এ তত্ত্বটি সঠিকভাবে কাজ করতে গেলে, আমাদের জানা চারটি মাত্রার (দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা, সময়) বাইরেও আরও ছয় বা সাতটি অতিরিক্ত মাত্রা থাকতে হয়—যেগুলো আমাদের চোখে দেখা যায় না।
ডার্ক এনার্জি কী?
এটি একধরনের রহস্যময় শক্তি, যা দেখা যায় না, ছোঁয়া যায় না—কিন্তু মহাবিশ্বকে সম্প্রসারিত রাখতে এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন। অনেকে বিশ্বাস করেন, প্রায় ১৪ বিলিয়ন বছর আগে বিগ ব্যাং-এর সময় এই ডার্ক এনার্জির কারণেই মহাবিশ্ব দ্রুত প্রসারিত হয়।
গত বছর DESI-এর আরেক গবেষণায় বলা হয়, কৃষ্ণগহ্বর (black hole)-এর আচরণ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ডার্ক এনার্জির উৎপত্তির সূত্র খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। নতুন এই গবেষণা স্ট্রিং তত্ত্বকে বাস্তবতার আরও কাছাকাছি এনে দিয়েছে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল