প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, ‘ভুলে যাবেন না, আমরা আপনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছি।’
শনিবার দুপুরে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসমাবেশ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে হাসনাত বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত কিছুদিন আগে বলেছেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নাকি আওয়ামী লীগের। আপনি ভুলে যাবেন না, আমরা আপনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছি। আওয়ামী লীগ নির্বাচন করবে কি না, নির্বাচনে আসবে কি না, এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতার আট মাস পরে যেসব দাবিতে আজ এখানে জমায়েত হয়েছি, সেটা আমাদের জন্য গর্বের কিছু নয়। বরং লজ্জার। ৫ আগস্ট সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে, হাসিনার পুনর্বাসনের প্রতি সারা বাংলাদেশের মানুষ রেড কার্ড দেখিয়ে দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘৫ আগস্ট আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি, এই ভূখণ্ডে আওয়ামী লীগের আর পুনর্বাসন হবে না। যেই আওয়ামী লীগ আমাদের দাড়ি-টুপিওয়ালা ভাইদের বায়তুল মোকাররমের সামনে থেকে রাস্তায় নামিয়ে এনে হত্যা করেছিল, সেই আওয়ামী লীগের আর পুনর্বাসন হবে না।’
এই এনসিপি নেতা বলেন, ‘অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, আট মাস পরে এসে আমাদের দেশের অনেক রাজনৈতিক দল, অনেক রাজনীতিবিদ আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেয়, আওয়ামী লীগ নাকি রাজনৈতিক দল এবং এই রাজনৈতিক দল নিয়ে সিদ্ধান্তে আসার এখতিয়ার নাকি আমাদের নেই।’
‘আওয়ামী লীগ মারা গেছে বাংলাদেশে, আর জানাজা হয়েছে দিল্লিতে’ উল্লেখ করে হাসনাত বলেন, ‘শহীদদের রক্তের ওপর পাড়া দিয়ে এই আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে আসবে না। এই সংস্কার আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সংস্কার। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা ভুলে গেলে চলবে না, আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়। একাত্তর পরবর্তী সময়ে আপনারা দেখেছেন, শেখ মুজিব সর্বপ্রথম বাকশাল কায়েম করে গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করেছেন। এই বাকশালি দিয়ে ৩০ হাজার জাসদকর্মীকে হত্যা করে সারা বাংলাদেশে কসাইতন্ত্র কায়েম করেছে। তাদের লুটপাটের কারণে ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষে ১৫ লাখ মানুষ মারা গেছে।’
আওয়ামী লীগকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ উল্লেখ করে হাসনাত বলেন, ‘এই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে আমরা সংস্কার করতে চাই। প্রয়োজন হলে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে আমরা হাসিনার ফাঁসি নিশ্চিত করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে মহাসমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাহমুদুর হাসান কাশেমী, নায়েবে আমির আহমেদ কাশেমী, হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক প্রমুখ।