প্রতি বছরের মতো এবারও নভেম্বরে রাতের আকাশে দেখা যাবে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য—‘টোরিডস উল্কাবৃষ্টি’। পৃথিবী যখন ধূমকেতু এনকের রেখে যাওয়া ধূলিকণার পথ অতিক্রম করে, তখন এই উল্কাবৃষ্টি দেখা দেয়।
এই উল্কাবৃষ্টি আসলে দুই ভাগে বিভক্ত—দক্ষিণ টোরিডস ও উত্তর টোরিডস। দক্ষিণ টোরিডস ধূমকেতু এনকে-এর ধূলিকণা থেকে তৈরি হয়, আর উত্তর টোরিডসের উৎস একটি ছোট গ্রহাণু ২০০৪ টিজি যা বিজ্ঞানীরা একই ধূমকেতুর টুকরো বলে মনে করেন।
যখন এই ছোট মহাজাগতিক কণাগুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে, তখন ঘর্ষণে জ্বলে উঠে আকাশে উজ্জ্বল রেখা তৈরি করে—যা আমরা ‘উল্কা’ বা ‘ঝরন্ত তারা’ হিসেবে দেখি।
আমেরিকান মিটিওর সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ টোরিডসের সর্বোচ্চ সময় ছিল ৪ ও ৫ নভেম্বরের পূর্ণিমায়, তবে এটি ২০ নভেম্বর পর্যন্ত আকাশে দেখা যাবে। অপরদিকে, উত্তর টোরিডসের শীর্ষ সময় হবে ১১ ও ১২ নভেম্বরের অর্ধচন্দ্র রাতে, যা সক্রিয় থাকবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
যখন দুটি উল্কাধারা একসঙ্গে দেখা দেয়, তখন আকাশে আগুনের বলের মতো (Fireball) উজ্জ্বল উল্কার সংখ্যা বেড়ে যায়। এই সময়ে ঘণ্টায় গড়ে প্রায় ১০টি উল্কা দেখা সম্ভব। উজ্জ্বল এই উল্কাগুলোকে অনেকে ‘হ্যালোইন ফায়ারবল’ নামেও ডেকে থাকেন।
বিজ্ঞানীরা বলেন, এই ধরনের উল্কাবৃষ্টি শুধু দৃষ্টিনন্দন নয়, বরং এটি মহাকাশের সম্ভাব্য ঝুঁকি—যেমন বায়ুমণ্ডলে বিস্ফোরণ বা পৃথিবীতে পতনশীল বস্তুর মতো ঘটনার সম্পর্কে ধারণা দিতেও সাহায্য করে।
উল্কাবৃষ্টি উপভোগের জন্য শহরের কৃত্রিম আলোর বাইরে, খোলা ও অন্ধকার আকাশের নিচে থাকা সবচেয়ে উপযুক্ত। টোরিডস উল্কাগুলি তুলনামূলক ধীর গতিতে (প্রায় ২৭ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ড) চলে, তাই ধৈর্য ধরে দেখলে এক অনন্য সৌন্দর্যের অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল