ঘনিয়ে আসছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচন সামনে রেখে সিলেট বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা ছুটছেন যুক্তরাজ্যে। মনোনয়নের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তাঁরা দেখা করছেন। এরই মধ্যে ডজনখানেক নেতা যুক্তরাজ্য থেকে ঘুরে এসেছেন। বাকিরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন যুক্তরাজ্য যাওয়ার। আবার প্রবাসী নেতারাও সিলেটে এসে প্রার্থী হওয়ার লক্ষ্যে সভা-সমাবেশ করছেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সিলেটের ছয়টি সংসদীয় আসনে অর্ধশতাধিক নেতা দলীয় মনোনয়নের আশায় মাঠে নামেন। তারেক রহমানের রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফাসহ দলীয় কর্মসূচি নিয়ে তাঁরা এলাকায় গণসংযোগ বাড়ান। তবে দলীয় মনোনয়নের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তারেক রহমানের গ্রিন সিগন্যাল- এমন বিশ্বাসে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের শুরু হয় যুক্তরাজ্যমুখী দৌড়ঝাঁপ।
দলীয় সূত্র জানায়, যুক্তরাজ্যে গিয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা বিগত ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে নিজেদের ভূমিকার কথা তুলে ধরছেন। প্রার্থী হিসেবে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের চেষ্টা করে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিশেষ আনুকূল্য পাওয়ার চেষ্টা করছেন। তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করে এসে অনেকে নির্বাচনে মনোনয়নের ব্যাপারে গ্রিন সিগন্যাল পাওয়ার কথা প্রচারও করছেন। এখন পর্যন্ত যেসব মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির ও আরিফুল হক চৌধুরী। এর মধ্যে গত ৬ মে আরিফুল হক চৌধুরী এবং গত সপ্তাহে খন্দকার মুক্তাদিরের সাক্ষাৎ হয় তারেক রহমানের সঙ্গে। এরপর থেকে আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট-১ আসন থেকে জিয়া পরিবারের কাউকে প্রার্থী হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আসছেন। জিয়া পরিবারের কেউ প্রার্থী না হলে তিনি আসনটি থেকে নির্বাচন করার আগ্রহ ব্যক্ত করছেন। এর আগে সিলেট-৪ আসন থেকেও তাঁর প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন উঠেছিল। গেল কয়েক দিন থেকে তিনি ফের সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী হওয়ার বিষয়টিও আলোচিত হচ্ছে। এদিকে গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যে খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরের ভাতিজার বিয়েতে সপরিবার উপস্থিত ছিলেন তারেক রহমান। এ সময় তারেক রহমানের পাশে হাস্যোজ্জ্বল মুক্তাদিরকে দেখা গেছে। দলীয় সূত্র জানান, সিলেট-১ আসনে খন্দকার মুক্তাদির বিএনপির দলীয় প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত। এরপরও তিনি বসে নেই। নির্বাচনি এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচিতে তিনি ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিশেষ করে তারেক রহমানের রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা নিয়ে তিনি তরুণদের সঙ্গে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। তরুণদের নিয়ে তাঁর বিভিন্ন কর্মকাণ্ড বেশ প্রশংসিত হচ্ছে। সিলেট-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে অন্যতম জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী। সম্প্রতি তিনি যুক্তরাজ্য সফর করে দেশে ফিরেছেন। সফরকালে তিনি তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করেছেন। একই আসনে অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশী মহানগর বিএনপির সহসভাপতি ব্যারিস্টার রিয়াসাদ আজিম আদনানও বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তাঁরও তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে। এ ছাড়া সিলেট-৪ আসনের আবদুল হাকিম চৌধুরী, সিলেট-৫ আসনের মামুনুর রশিদ মামুন, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু ও জাকির হোসেন সাক্ষাৎ করেছেন তারেক রহমানের সঙ্গে। সিলেট-৬ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী ড. এনামুল হক চৌধুরী, এমরান আহমদ চৌধুরী ও ফয়সল আহমদ চৌধুরী এরই মধ্যে তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। একই আসনের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী আবুল কাহের চৌধুরী শামীমও যুক্তরাজ্যে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট-৬ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘গত জুলাই মাসে আমি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করে এসেছি। তিনি আমার গণমুখী কাজের প্রশংসা করেছেন। আমি ২০০৮ সাল থেকে তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলাম। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমাকে এলাকায় কাজ করে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।’