বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি চলছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান কার্যালয় নগর ভবনে। আন্দোলনকারীরা মূল ফটকসহ গুরুত্বপূর্ণ নাগরিকসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। এতে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের নাগরিকসেবা। কর্মবিরতিতে রয়েছেন শ্রমিক ও কর্মচারীরাও।
গতকাল সরেজমিন দেখা যায়, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল ও স্লোগান নিয়ে নগর ভবনের সামনে জড়ো হন। পরে তারা মূল ভবনের নিচে অবস্থান নেন। ফলে ভবনটির কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় আন্দোলনকারীরা স্লোগান দেন- ইশরাক তোমার ভয় নাই রাজপথ ছাড়ি নাই, ইশরাকের শপথ নিয়ে টালবাহানা মানব না, ইশরাক ভাই এগিয়ে চলো আমরা আছি তোমার সঙ্গে। প্রধান ফটকে তালা লাগানো থাকায় নগর ভবনের ভিতরে প্রবেশ করতে পারছেন না সেবাপ্রত্যাশীরা। ফলে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন, হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধসহ সব ধরনের নাগরিকসেবা বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। আন্দোলনকারীরা বলেছেন, গত দুই দিন সরকারি বন্ধ ও জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীর বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকায় আমাদের আন্দোলন বন্ধ ছিল। তবে আন্দোলন চলমান। যতদিন আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে না পাব, ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ানো হবে, ততদিন আন্দোলন চালিয়ে যাব। গত ১৪ মে থেকে ইশরাক হোসেনের পক্ষে টানা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তার সমর্থকরা।
ইশরাকের শপথসংক্রান্ত আদেশের কপি ইসিতে পৌঁছেছে : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথসংক্রান্ত আদেশের কপি গতকাল সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনে (ইসি) পৌঁছেছে। এ বিষয়ে আজ নির্বাচন কমিশনে বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত আসতে পারে। জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ গতকাল রাতে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আদেশের কপি আমরা হাতে পেয়েছি। এর আগে গতকাল বিকালে আখতার আহমেদ বলেন, ইশরাকের বিষয়েও মাননীয় আদালতের পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা এলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইসির কর্মকর্তারা বলেন, আজ নির্বাচন কমিশন এই আদেশের কপি নিয়ে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। এরপরে ইসি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারে। ইশরাক হোসেনের শপথ আটকাতে আপিল বিভাগে যে আবেদন করা হয়েছিল, ২৯ মে তা পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এ জটিলতায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন, নির্বাচন কমিশন এ ক্ষেত্রে তার সাংবিধানিক দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেনি। ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট জারির জন্য নির্বাচন কমিশন মন্ত্রণালয়ের কাছে যে মতামত চেয়েছিল, তা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেন সর্বোচ্চ আদালত।