উগ্রপন্থা রোধ করতে ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বের ১৩২টি দূতাবাস ও কনস্যুলেট বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। উগ্রপন্থার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদেরও ছাঁটাই করা হচ্ছে। গত ২২ এপ্রিল মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিয়ো এ পরিকল্পনার বিষয় তুলে ধরেছেন।
মার্কো রুবিয়ো উল্লেখ করেছেন, বহির্বিশ্বে মার্কিন মূল্যবোধ, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সুশাসনের ধারা বইয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই এ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এতে বহু বছর ধরে কর্মরত দপ্তরসমূহের বিলুপ্তির পাশাপাশি উগ্রপন্থি রাজনৈতিক নীতির প্রসারে নিয়োজিত কর্মকর্তাদেরকে ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তিনি জানান, এর ফলে অকারণে ব্যয়ের পরিধি সংকুচিত হবে। তিনি ঘোষণা করেন, সারাবিশ্বে এবং ডিসিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৭৩৪ অফিসের ১৮ ভাগ কমিয়ে ৬০২টি করা হবে। এর ফলে বিলুপ্তি ঘটবে ৭০০ পদ। তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে মন্ত্রণালয়ের ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এখন আমরা আমেরিকার জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে সবকিছু করার চেষ্টা করছি। বাহুল্য ব্যয় কমিয়ে খেটে খাওয়া আমেরিকানদের স্বার্থ সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর ট্রাম্প প্রশাসন।’ জানা গেছে, নয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৩২টি দূতাবাস ও কনস্যুলেট বন্ধ ছাড়াও বিলুপ্তির তালিকায় রয়েছে রিফিউজি দপ্তর। বিলুপ্তির পরিকল্পনায় রয়েছে আফ্রিকা অঞ্চলের কয়েকটি দেশের মিশন। তবে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ইত্যাদি দেশের মার্কিন কনস্যুলেট কিংবা দূতাবাস-হাইকমিশনে কাটছাঁটের কোনো পরিকল্পনার বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, বর্তমানে মোট ৮০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে বিদেশি মিশনসমূহে ৫০ হাজার কর্মচারী রয়েছেন সংশ্লিষ্ট দেশের নাগরিকেরা। অবশিষ্ট ৩০ হাজারের মধ্যে ১৪ হাজার হলেন আমেরিকান এবং কূটনীতিক পেশায় অভিজ্ঞ। এরা পররাষ্ট্র বিষয়ক কর্মকর্তা। অপর ১৩ হাজার কর্মচারীর সবাই ওয়াশিংটন ডিসিতে মন্ত্রণালয়ে কাজ করছেন। নতুন এই পরিকল্পনা সম্পর্কে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির প্রভাবশালী সদস্য নিউইয়র্কের ডেমোক্র্যাট-কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি মিক্স বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা ও মর্যাদাকে বহির্বিশ্বে একেবারেই খাটো করার মতলবে হাঁটছে ট্রাম্প প্রশাসন।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেছেন, ‘সর্বশেষ এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে মানবাধিকার সমুন্নত এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ জাগ্রত রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকারকে খর্ব করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।’ ট্যামি ব্রুস দাবি করেন, ‘আমাদের আমেরিকান মূল্যবোধ অবশ্যই সমুন্নত রাখতে হবে।’