নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন মানুষ। গতকাল সকালের ট্রেনগুলোতে যাত্রীদের খুব একটা চাপ লক্ষ্য করা যায়নি। ট্রেনে স্বাচ্ছন্দ্যেই বাড়ি ফিরছেন মানুষ। তবে সড়কপথে কিছু চাপ ছিল যাত্রীর। সদরঘাটে যাত্রী উপস্থিতি আগের তুলনায় বেড়েছে।
আজ স্বাধীনতা দিবসের ছুটি এবং ঈদের আগে শুধু বৃহস্পতিবার একমাত্র কর্মদিবস হওয়ায় ওই একদিন ছুটি নিয়ে অনেকেই বিকাল ও রাতের ট্রেনে বাড়ির পথে রওনা হয়েছেন। ফলে রাতের ট্রেনগুলোতে যাত্রীদের তুলনামূলক ভিড় ছিল বেশি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন মূলত কর্মজীবীরা তাদের পরিবার-পরিজনকে বাড়ি পাঠাচ্ছেন। আর যাদের রাজধানীতে বিশেষ কোনো কাজ নেই তারা বাড়ি চলে যাচ্ছেন। আগামী বৃহস্পতিবার সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীদের ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস হওয়ায় ওইদিন সন্ধ্যা থেকে বাড়িমুখো মানুষের ঢল নামবে। গতকাল রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন প্রথমে ছেড়ে যায়। এরপর একে একে নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যায় অন্যান্য ট্রেন। প্রথম দিন দুটি ট্রেনে বড় শিডিউল বিপর্যয় হলেও গতকাল তা খুব একটা হয়নি।
যাত্রী সমাগম কিছুটা বাড়লেও মহাখালী, গাবতলীসহ অন্যান্য বাস টার্মিনালগুলোতে নেই যাত্রীর অতিরিক্ত চাপ। তবে গত সোমবারের তুলনায় গতকাল চাপ কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেকেই আগেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। দীর্ঘ ছুটির কারণে যাত্রীরা ধাপে ধাপে ঢাকা ছাড়ছেন, ফলে চাপ কমেছে। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে যাত্রীর চাপ বাড়তে পারে।
সরেজমিনে সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের আগে যাত্রীদের তিন দফা চেকিংয়ের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। চেকিং গেটগুলোতে ট্রাভেলিং টিকিট এক্সামিনারদের (টিটিই) পাশাপাশি তাদের কাজে সহযোগিতা করছেন স্কাউট সদস্যরা। স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম এলাকায়ও নেই যাত্রীদের খুব একটা ভিড়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি ট্রেনই নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যাওয়ায় যাত্রীদের খুব একটা অপেক্ষাও করতে হয়নি।
জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী ইসরাফিল হোসেন বলেন, ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনে কোনো ট্রেন বিলম্ব হয়নি এটাই স্বস্তি। দুই তিন বছর আগেও একটি ট্রেনের জন্য যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা কমলাপুর স্টেশনে অপেক্ষা করতে হতো। এবার এসে দেখলাম তেমন বাড়তি যাত্রী নেই প্ল্যাটফর্মে।
কক্সবাজার এক্সপ্রেসের যাত্রী আশিকুর রহমান বলেন, বাচ্চাদের স্কুল-কলেজ ছুটি হয়ে যাওয়ায় তাদের নিয়ে আমি বাড়ি চলে যাচ্ছি। শেষ সময়ে ভিড় বাড়তে পারে সেই বিবেচনায় আগেই চলে যাচ্ছি।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন সূত্র জানায়, প্ল্যাটফর্মে টিকিটবিহীন প্রবেশ বন্ধে কয়েক স্তরের চেকিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। টিকিট যার যাত্রা তার- নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর ফলে যাত্রীরা বিনা ঝামেলায় ট্রেনে উঠতে পারছেন। বরাবরের মতো বাংলাদেশ রেলওয়ে এবারও ঈদযাত্রায় বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বিনা টিকিটে যাত্রী প্রতিরোধে ও স্টেশনে নিরাপত্তা জোরদার করতে স্টেশনগুলোতে জিআরপি, আরএনবি, বিজিবি ও স্থানীয় পুলিশ এবং র্যাব সদস্যরা সার্বক্ষণিক উপস্থিত রয়েছে।
ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, মঙ্গলবার সব ট্রেন যথাসময়ে ঢাকা স্টেশন ছেড়েছে। যাত্রীদের কোনো ভোগান্তি পোহাতে হয়নি। স্বাচ্ছন্দ্যেই ঈদ উপলক্ষে বাড়ি ফিরছেন মানুষ।