চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানি সারা দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এবার সেই মেজবানি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ইফতার আইটেমেও। ইফতারে মেজবানের মাংসের সঙ্গে সাদা ভাত রাখছে কেউ, আবার কেউ বা রাখছে মেজবানি মাংসের সঙ্গে পরোটা। মাংসের সঙ্গে চনার ডাল ও নলার ঝোল ভোজনরসিকদের ভীষণ পছন্দ। দিনদিন ভোজনরসিকদের চাহিদায় জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ইফতারে এ মেজবানি। যার কারণে দিনদিন হোটেল-রেঁস্তোরায় বাড়ছে মেজবানি বিক্রির ধুম।
জানা যায়, চট্টগ্রামের ঐতিহ্য এ মেজবান। গরু জবাই করে সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়ানোর রেওয়াজ দীর্ঘদিনের। ধনী গরিব এক কাতারে বসে খাওয়া হয়। পরিবেশন হয় মাংস, হাড় দিয়ে চনার ডাল, নলা ঝোল। মুখরোচক খাবারে সবাই তৃপ্ত হন। এখন আর সেই মেজবান সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে সীমাবদ্ধ নেই। এটি এখন চলে এসেছে হোটেল-রেস্তোরাঁয়। আস্ত গরু জবাই করে মেজবানি রান্না করে মাংস বিক্রি করা হয়। মানভেদে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা পড়ে এক-একজনের। হোটেলে বসে খাওয়া যায় মেজবান। এ ছাড়া কেজি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় পাওয়া যায় মেজবানের মাংস। গত কয়েক বছর ধরে এ মেজবানি দখল করে নিয়েছে ইফতারিতেও। ‘রোদেলা বিকেল’র মালিক রফিকুল বাহার বলেন, এবার আমাদের রেস্টুরেন্টে ওরস বিরিয়ানি যুক্ত করা হয়েছে। মেজবানিতে আমাদের মাংসে কোনো হাড় থাকে না। প্রতি কেজি ১৫০০ টাকায় বিক্রি করা এই মেজবানি মাংসে সবই মাংস থাকে। এ ছাড়াও বিদেশি তেলসহ উন্নত মানের মসলা ব্যবহার করছি। ফলে ভোজনরসিকদের আস্থায় পরিণত হয়েছে রোদেলা বিকেল। হোটেল জামানের মালিক মোহাম্মদ কায়সার জামান বলেন, হোটেল জামান চট্টগ্রামের ঐতিহ্য মেজবানকে মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে এসেছিল। মেজবান সবার পছন্দ। বিশেষ করে ঢাকা থেকে যারা চট্টগ্রামে বেড়াতে আসতেন, তারা মেজবান খুঁজতেন। তাই আমার বাবা মোহাম্মদ জামান চট্টগ্রামের কোর্টবিল্ডিং হোটেল জামান শাখায় মেজবানের আয়োজন করতেন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার। এ দুই দিন দূরদূরান্ত থেকে এসে মেজবান খেতেন ভোজনরসিকরা।