আদালতে রিমান্ড শুনানিতে এসে এবার স্বজনকে চিঠি দিয়ে ‘গোপন বার্তা’ পাঠালেন সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। এ সময় পুলিশ সদস্যরা বাধা দিলেও চিঠি নিয়ে সটকে পড়েন এনামুর রহমানের ভাই পরিচয় দানকারী অজ্ঞাত ব্যক্তি। গতকাল ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওঠানোর সময় এ চিঠি দেন ডা. এনামুর রহমান। এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এনামসহ চারজনকে আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশ প্রহরায় তাঁদের ৯টা ৩২ মিনিটে কাঠগড়ায় তোলা হয়। এ সময় এনামুর তাঁর বাঁ পকেট থেকে সাদা কাগজের চিঠি বের করেন। বের করেই এক ব্যক্তির হাতে তুলে দেন। পরে ওই ব্যক্তি নিজেকে এনামুর রহমানের ভাই পরিচয় দেন। তবে ওই চিঠিতে কী বার্তা দিলেন-জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি। চিঠি নিয়ে দ্রুত সটকে পড়েন। এরপর শুনানি শেষে সাভারে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাইয়ুম হত্যা মামলায় ডা. এনামুর রহমানকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। শুনানিতে ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু তখন বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে নির্দেশ দিয়েছি। আমি নিজে গিয়েছি। জুলাই থেকে অক্টোবর চার মাসে গুলিবিদ্ধ ২৯০ জনকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দিয়েছি। ওষুধ, খাবার দিয়েছি। অপারেশন করিয়েছি। জরুরি বিভাগ থেকে আহত ৫৭৬ জনকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছি। সব রেকর্ডে আছে। রানা প্লাজা ভবন ধসের সময় সাড়ে ৫ হাজার শ্রমিককে চিকিৎসা দিয়েছে আমার এনাম মেডিকেল মানবিক হাসপাতাল।’ পরে আদালত রিমান্ড মঞ্জুরসহ ডা. এনামকে নতুন আরও পাঁচ মামলায় গ্রেপ্তার দেখান। এর আগে টিস্যু পেপারে এমন চিঠি লিখে গোপন বার্তা দেওয়ার ঘটনায় সাবেক শিক্ষা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক আলোচনায় আসেন।
ভয়ে শেখ হাসিনার পাশে থাকতেন দাবি নাসার নজরুলের। এদিকে ‘শেখ হাসিনার পাশে না থাকলে বড় ভাইয়ের মতো অবস্থা (ক্রসফায়ারে মারা) হতো’ বলে আদালতে দাবি করেছেন এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। গতকাল একই আদালতে ধানমন্ডি ও যাত্রাবাড়ী থানার রিমান্ড শুনানিতে তিনি এ কথা বলেন। দুই মামলায় তাঁকে পাঁচ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শুনানিতে পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, আন্দোলন যখন চলছিল সব ব্যাংকার এবং ব্যবসায়ীরা একটা মিটিং করেছিল। সে মিটিংয়ে উনি বক্তব্য দিয়েছিলেন। সে বক্তব্যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন এবং শেখ হাসিনা বলেছিলেন আপনি চালিয়ে যান আমরা আপনার পাশে আছি।
এরপর নজরুল ইসলাম আদালতের অনুমতি নিয়ে বলেন, ‘আমি হার্টের রোগী। অনেক কষ্ট হচ্ছে। ও সময় শেখ হাসিনার পাশে না থাকলে... আমার বড় ভাই পাঁচ বছর এমপি ছিল। সেই বড় ভাইকে ক্রসফায়ারে মারা হয়েছে। আমারও সেই অবস্থা হতো। আমার রিমান্ড বাতিল করে আমাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। এটা আমার একটা সাবমিশন।’ পরে আদালত তাঁকে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।