শিক্ষক, সমাজকর্মী, সরকারি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন এবং সেই কমিটির অনুমতি ছাড়া ঢাকা শহরসহ অন্যান্য জেলা-উপজেলা শহরে, মহাসড়কের পাশে ও সামাজিক বনায়নের গাছ কাটা যাবে না বলে রায় দিয়েছেন হাই কোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে গতকাল বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। তবে গ্রামাঞ্চলে ব্যক্তি মালিকানাধীন গাছ কাটতে অনুমতি লাগবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ, তাঁকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল ও অ্যাডভোকেট সেলিম রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. শফিকুর রহমান।
পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের জানান, মূলত ঢাকাসহ সব জেলা, উপজেলা শহর, মহাসড়কের পাশের গাছ, সামাজিক বনায়নের গাছ কাটতে অনুমতি নিতে হবে। তবে গ্রামাঞ্চলে ব্যক্তিগত গাছ কাটতে অনুমতি নেওয়া লাগবে না।
তাপমাত্রা অত্যধিক বৃদ্ধি ও জনজীবন অতিষ্ঠ হওয়ার মধ্যেও বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে মর্মে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে গত বছর জনস্বার্থে এ রিট করা হয়। গত বছরের ৭ মে হাই কোর্ট রুল জারি করেন। সেই রুলের শুনানি শেষে গতকাল রায় দেন হাই কোর্ট। মনজিল মোরসেদ জানান, আদালতের রুল মঞ্জুর করে রায় দিয়েছেন হাই কোর্ট। সাত দিনের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরকে গাছ কাটার অনুমতি নেওয়ার জন্য পরিবেশবাদী, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়াও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে সাত দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে জেলা প্রশাসক, জেলা পরিবেশ কর্মকর্তা, সরকারি কলেজের অধ্যাপক, সমাজকর্মী, পরিবেশবিদ ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা সিভিল সার্জনকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে বলেছেন। যারা জেলা পর্যায়ের গাছ কাটার অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবেন। এ ছাড়াও রায়ে সামাজিক বনায়ন বিধিমালা-২০০৪ এর অধীনের রোপণ করা গাছ কাটা যাবে না, বরং গাছের সমমূল্যে টাকা রোপণকারীকে দিতে হবে। এই মর্মে সামাজিক বনায়ন বিধিমালায় পরিবর্তন আনারও নির্দেশনা দেন।