ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার প্রধান শহর গাজা সিটি ছেড়ে বাসিন্দাদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। নতুন একটি অভিযান শুরু করার আগে গতকাল এ নির্দেশ দিয়েছে তারা। ইসরায়েল সতর্ক করে বলেছে, হামাস তাদের হাতে বন্দি শেষ জিম্মিদের মুক্তি না দিলে তারা ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের’ মতো শক্তিতে ছিটমহলটিতে আক্রমণ চালাবে। রয়টার্স জানিয়েছে, গাজা সিটিকে হামাসের শেষ ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত করেছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটিতে শেষ আঘাত হানতে একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে ইসরায়েল সরকার। এই পরিস্থিতিতে প্রায় ১০ লাখ বাসিন্দার গাজা সিটির ফিলিস্তিনিরা কয়েক সপ্তাহ ধরে একটি আক্রমণ চলতে পারে বলে আশঙ্কা করছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আমি গাজার বাসিন্দাদের বলছি, এই সুযোগটি গ্রহণ করুন আর সতর্কভাবে আমার কথা শুনুন : আপনাদের সতর্ক করা হচ্ছে- সেখান থেকে চলে যান!’ ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষগুলোর এসব হুমকিতে গাজা সিটির বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ও বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। কিছু বাসিন্দা জানিয়েছেন, দক্ষিণে চলে যাওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো গতি নেই। আর অধিকাংশ বাসিন্দা বলছেন, যেহেতু অন্য কোনো জায়গাও নিরাপদ নাই তাই তারা গাজা সিটিতেই থাকবেন, কোথাও যাবেন না। ছয় সন্তানের মা উম মোহাম্মদ (৫৫) বলেন, ‘গত সপ্তাহে বোমাবর্ষণ সত্ত্বেও আমি চলে যেতে বাধা দিয়েছি, কিন্তু এখন আমি আমার মেয়ের সঙ্গে চলে যাব।’ ২০২৩-এর অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজাবাসীদের ইতোমধ্যে কয়েকবার বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে। নাজুক হতে থাকা মানবিক সংকটের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর আদেশ মেনে তাদের বারবার কখনো ছিটমলটির উত্তরে আর কখনো দক্ষিণে সরে যেতে হয়েছে। ওই মানবিক সংকট এখন প্রায় দুর্ভিক্ষে রূপ নিয়েছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী গাজা সিটির বাসিন্দাদের দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস শহরের আল-মাওয়াসি এলাকায় চলে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে, যেটিকে কথিত ‘মানবিক জোন’ বলে অভিহিত করছে তারা। নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনীগুলো একটি স্থল ‘অভিযান’ চালাতে গাজা সিটিতে জড়ো হয়ে সংগঠিত হচ্ছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, হামাস তাদের হাতে বন্দি শেষ জিম্মিদের মুক্তি দিয়ে আত্মসমর্পণ না করলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের’ মতো করে অভিযান চালাবে। -রয়টার্স