ইস্তাম্বুলের মেয়র ইকরাম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বিবৃতিগুলোকে খারিজ করে দিয়েছে তুরস্ক। ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের প্রতিক্রিয়ায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ থেকে প্রায় ১ হাজার ৯০০ লোককে আটক করার কথাও গতকাল জানিয়েছে তারা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, এ মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ইমামোগলুকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে পাঠানোর ঘটনা তুরস্কজুড়ে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। প্রতিবাদ দমনে সরকারকে আশ্রয় নিতে হয়েছে গণগ্রেপ্তারের। বেশ কয়েকটি জরিপে জনপ্রিয়তায় এরদোয়ানকে ছাড়িয়ে যাওয়া ইমামোগলুকে বিরোধীদল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) তাদের ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বানিয়েছে। রবিবার ইমামোগলুকে আনুষ্ঠানিক গ্রেপ্তার দেখানো ও পরে তাকে রিমান্ডে পাঠানোর ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মনে করছে সিএইচপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল। বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠী ও পশ্চিমা অনেক দেশ মনে করছে, নির্বাচনে সম্ভাব্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হওয়া ইমামোগলুকে সরিয়ে দিতেই এমন চাল চেলেছে এরদোগানের সরকার। তবে সরকার বলছে, বিচারব্যবস্থার ওপর তাদের কোনো হাত নেই এবং দেশটির আদালতগুলো স্বাধীন। ইস্তাম্বুলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলার সময় তুর্কি বিচারমন্ত্রী ইলমাজ তুনচ ইউরোপীয় অংশীদারদের ‘কাণ্ডজ্ঞান’ খাটিয়ে কাজ করতে অনুরোধ করেছেন। বলেছেন, ইমামোগলুর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তার মাত্রা বিবেচনা করেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ‘আমরা কোনো রাজনীতিককে গ্রেপ্তার করতে চাই
না, কিন্তু যদি আইনের লঙ্ঘন ঘটে, তখন তো করতেই হয়। আমরা যদি অভিযোগগুলোর মাত্রার দিকে তাকাই, যদি তথ্যপ্রমাণ লোপাটের ঝুঁকি থাকে, তাহলে বিচার বিভাগকে দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত তো নিতেই হয়,’ অনুবাদকের মাধ্যমে এমনটাই বলেছেন তুনচ। গ্রেপ্তার হওয়ার পর ইমামোগলুকে মেয়র পদ থেকে বরখাস্তও করেছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার ডাক দেওয়া সিএইচপি জানিয়েছে, তারা ইস্তাম্বুল ও অন্যত্র আরও বিক্ষোভ ও সমাবেশের আয়োজন করবে। এরদোগান এ বিক্ষোভকে ‘নাটক’ আখ্যা দিয়ে বিক্ষোভকারীদের আইনি পরিণতি ভোগ করার হুমকি দিয়েছেন। তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়েরলিকায়া বলেছেন, গত বুধবার থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত বিক্ষোভ থেকে ১ হাজার ৮৭৯ জনকে আটক করা হয়েছে, তার মধ্যে ২৬০ জনকে রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। ৪৮৯ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, ৬৬২ জনের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিক্ষোভে দেড় শ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।-রয়টার্স