ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখোমুখি বৈঠকের পরিকল্পনা চলছিল। কিন্তু হোয়াইট হাউস বলছে, তারা বৈঠকটি স্থগিত করেছে। ট্রাম্প বলছেন, তিনি কোনো ‘অর্থহীন বৈঠকে’ বসে সময় নষ্ট করতে চান না।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে দেওয়া এক বক্তব্যে ট্রাম্প জানান, আলোচনায় প্রধান বাধা হচ্ছে বর্তমান যুদ্ধবিরতিতে রাশিয়ার অস্বীকৃতি। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেন, আপাতত ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের কোনো পরিকল্পনা নেই। অথচ গত সপ্তাহে ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে বুদাপেস্টে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক হবে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রস্তাবগুলোর মধ্যে পার্থক্য আরও স্পষ্ট হয়েছে। এই অবস্থায় দুই নেতার বৈঠক কার্যত অর্থহীন হয়ে পড়েছে। গত আগস্টে আলাস্কায় ট্রাম্প ও পুতিনের এক সংক্ষিপ্ত বৈঠক হয়েছিল। তবে সেখানেও কোনো সুনির্দিষ্ট ফলাফল আসেনি।
এ সপ্তাহে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের মধ্যে প্রস্তুতিমূলক বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে হোয়াইট হাউস জানায়, তাদের মধ্যে ইতিমধ্যেই একটি গঠনমূলক’ ফোনালাপ হয়েছে। তাই আলাদা বৈঠকের প্রয়োজন নেই।
সম্প্রতি ট্রাম্প এক যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব সমর্থন করেছেন যেখানে বর্তমান সমররেখায় যুদ্ধ থামানোর আহ্বান জানানো হয়। ট্রাম্প বলেন, যেভাবে আছে, সেভাবেই রেখা টেনে দাও। লড়াই থামাও, ঘরে ফিরে যাও, মানুষ হত্যা বন্ধ করো।
কিন্তু রাশিয়া এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, রাশিয়ার অবস্থান অপরিবর্তিত। ইউক্রেনীয় সেনারা পূর্ব ইউক্রেনের এলাকা সম্পূর্ণভাবে না ছাড়লে যুদ্ধবিরতি সম্ভব নয়।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ জানিয়েছেন, মস্কো কেবল ‘দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই শান্তি’ চায়। তার মতে, সমররেখা স্থির রাখা শুধু সাময়িক বিরতি দেবে। এটা মূল সমস্যার সমাধান নয়। তিনি বলেন, সংঘাতের মূল কারণগুলোর সমাধান করতে হবে যার মধ্যে আছে দোনবাস অঞ্চলে রুশ সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি ও ইউক্রেনীয় সেনাদের নিরস্ত্রীকরণ।
অন্যদিকে, ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, শান্তি আলোচনা শুরু হওয়া উচিত বর্তমান যুদ্ধরেখা বজায় রেখে। তারা অভিযোগ করেন, রাশিয়া ‘শান্তির ব্যাপারে আন্তরিক নয়’।
এদিকে কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প ও জেলেনস্কির সাম্প্রতিক বৈঠকে মতবিরোধ তৈরি হয়। একাধিক সূত্র জানায়, ট্রাম্প ইউক্রেনকে দোনবাস অঞ্চলের কিছু অংশ রাশিয়ার হাতে ছেড়ে দিতে বলেছিলেন। কিন্তু জেলেনস্কি দৃঢ়ভাবে জানিয়েছেন, ইউক্রেন কোনো অংশ ছেড়ে দেবে না। কারণ রাশিয়া ওই এলাকা ভবিষ্যতের হামলার ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল