পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়াতে একটি জ্বালানিবাহী ট্যাঙ্কারে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩৮ জন নিহত ও আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দেশটির নাইজার অঙ্গরাজ্যের এজ্জা গ্রামে কাচা-আগাই সড়কে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে এপি নিউজ ও টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানায়, জ্বালানি বোঝাই একটি ট্যাঙ্কার সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে উল্টে যায়। এরপর বিপুল পরিমাণ তেল রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের বহু মানুষ তখন ট্যাঙ্কার থেকে ছড়িয়ে পড়া জ্বালানি সংগ্রহে ছুটে আসে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে, মুহূর্তেই আগুনে পুড়ে যায় আশপাশের সবাই।
নাইজার রাজ্যের পেট্রোলিয়াম ট্যাঙ্কার ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ফারুক মোহাম্মদ কাও বলেন, বেশিরভাগ নিহত ব্যক্তি বিস্ফোরণের আগে ট্যাঙ্কার থেকে তেল সংগ্রহ করছিলেন।
অন্যদিকে, ফেডারেল রোড সেফটি কর্পস (FRSC)–এর নাইজার শাখার কমান্ডার হাজিয়া আইশাতু সাদু জানিয়েছেন, এখনো উদ্ধারকাজ চলছে। বিস্ফোরণের পর এলাকাটিতে ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে সড়কের খারাপ অবস্থার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
নাইজার অঙ্গরাজ্যের গভর্নর উমারু বাগো এক বিবৃতিতে বলেন, মানুষ এখনও ঝুঁকি জেনেও উল্টে যাওয়া ট্যাঙ্কার থেকে তেল সংগ্রহের চেষ্টা করছে—এটা অত্যন্ত মর্মান্তিক ও হতাশাজনক। এটি আমাদের জন্য আরও একটি বেদনাদায়ক ও কঠিন ট্র্যাজেডি।
পুলিশের মুখপাত্র ওয়াসিউ আবিওডুন জানান, দুর্ঘটনার পর চালক ও মালিকের পরিচয় শনাক্তে তদন্ত চলছে।
গত বছর নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু জ্বালানি ভর্তুকি তুলে দেওয়ার পর থেকে দেশটিতে তেলের দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ফলে অনেক দরিদ্র মানুষ এখন বিপজ্জনকভাবে উল্টে যাওয়া ট্যাঙ্কার থেকে জ্বালানি সংগ্রহের চেষ্টা করে।
এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতেই নাইজার অঙ্গরাজ্যে একই ধরনের দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল, যখন স্থানীয়রা জেনারেটর ব্যবহার করে এক ট্যাঙ্কার থেকে অন্য ট্যাঙ্কারে তেল স্থানান্তর করার চেষ্টা করছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল