কাশ্মীরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিলের হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহতের পর ভারত-পাকিস্তানের সংঘাত শুরু হয়। তবে শেষমেশ গত শনিবার দুই দেশ সংঘর্ষবিরতি ঘোষণাতে সম্মত হয় এবং রবিবার রাত ছিল পুরোপুরি শান্ত, পাওয়া যায়নি কোনো সংঘর্ষের খবর। তবে কাশ্মীরে নেই সেই পুরনো চিত্র।
ভারত-শাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেছেন, উপত্যকায় স্কুল-বিমানবন্দর ও আকাশসীমা সবই বন্ধ রয়েছে এবং কোনও পর্যটকও নেই। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
তিনি বলেন, এই সময়ে কাশ্মীরে পর্যটকে ভরে থাকার কথা ছিল, অর্থনীতি চাঙা থাকার কথা ছিল, স্কুলে পড়াশোনা চলার কথা ছিল, বিমানবন্দরে প্রতিদিন ৫০-৬০টি ফ্লাইট ওঠানামা করার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবতা হল- পর্যটক নেই, স্কুল বন্ধ, বিমানবন্দর বন্ধ, আকাশসীমা বন্ধ।
ওমর আবদুল্লাহ আরও বলেন, আমরা এমন এক জায়গায় পৌঁছে গেছি, যেটা আশা করিনি। এই মুহূর্তে দুর্দশা, অস্থিরতা সব চলছে। সবকিছু বদলে গেছে, আবার কিছুই বদলায়নি।
তিনি দাবি করেন, পেহেলগামে হামলার ফলে রাজ্যের অর্থনীতি ও কূটনৈতিক পরিস্থিতিতে যে অগ্রগতি হয়েছিল, তা একেবারে ভেঙে পড়েছে। দীর্ঘ সময় পর পর্যটন ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল, কিন্তু এই হামলার কারণে তা আবার থেমে গেছে।
এদিকে, কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব আয়াজ আহমদ চৌধুরী বলেছেন, সাম্প্রতিক উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি আবারও প্রমাণ করেছে, পাকিস্তান-ভারত দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দু এখনো কাশ্মীর সংকটই।
জিও পাকিস্তানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘জম্মু ও কাশ্মীরের ৯৩ শতাংশ মানুষ মুসলিম, তবুও ১৯৪৭ সালে গভীর এক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অঞ্চলটি পাকিস্তানের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।’ তার মতে, এটি ছিল একটি ‘ঐতিহাসিক অন্যায়’ যা এখনো সমাধান হয়নি।
আয়াজ আহমদ আরও বলেন, ‘কাশ্মীরের প্রশ্নে পাকিস্তান তার অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে—এটাই হচ্ছে মূল ইস্যু, এবং এর সমাধান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তি সম্ভব নয়।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ভারতের বুঝে নেওয়া উচিত কাশ্মীরিরা তাদের সঙ্গে থাকতে চায় না।' তার মতে, ভারতের দমনমূলক নীতিই সংঘাত দীর্ঘায়িত করছে।
বিডি-প্রতিদিন/শআ