রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে আগুন ধরে গেলে শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে গিয়ে দগ্ধ হন শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরী। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রথমে একাধিক শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেন। পরে আবারও কয়েকজনকে বাঁচাতে ভিতরে গেলে নিজেই পুড়ে যান। ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাতে তিনি মারা যান।
মাহেরীন নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বগুলাগাড়ী রাজারহাট চৌধুরী পাড়ার মহিতুর রহমান চৌধুরীর মেয়ে। গতকাল বিকালে বগুলাগাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে জানাজা শেষে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মাহেরীনের স্বামী মনসুর হেলাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ওকে (মাহেরীন) জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তুমি তোমার নিজের দুই সন্তানের কথা একবারও ভাবলে না?’ সে বলল, ‘ওরাও তো আমার সন্তান। ওদের একা রেখে আমি কী করে চলে আসি? আমার সবকিছু দিয়ে চেষ্টা করেছি তাদের বাঁচাতে, কিন্তু পারিনি।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, ‘শেষরাতে হাসপাতালে ওর সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়। আইসিউতে শুয়ে মাহেরীন আমার হাত নিজের বুকের সঙ্গে চেপে ধরে বলেছিল তোমার সঙ্গে আর দেখা হবে না। আমি ওর হাত ধরতে গিয়েছিলাম, কিন্তু শরীরটা এমনভাবে পুড়ে গিয়েছিল যে ঠিকভাবে ধরতেও পারিনি।’
মাহেরীনের মৃত্যুতে চলছে শোকের মাতম। এলাকাবাসী জানান, শিক্ষকতার পাশাপাশি গ্রামে এসে সমাজসেবাও করতেন মাহেরীন। গত ২২ জুন বগুলাগাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। ২৮ জুলাই আবারও প্রতিষ্ঠানটিতে আসার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তার আগেই সেই প্রতিষ্ঠানের মাঠে তাঁর জানাজা হলো।