বিদেশি কর্মীদের জন্য আবার চালু হতে যাচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। এবার কর্মী নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটি। পাশাপাশি গত বছর টিকিটস্বল্পতার কারণে আটকে পড়া বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে প্রথম ব্যাচে ৭ হাজার ৯২৬ জনকে দ্রুত কাজের সুযোগ দেওয়া হবে। গতকাল মালয়েশিয়ায় প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী স্টিভেন সিম চি কেওংয়ের বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে উভয় পক্ষ একটি নিরাপদ, ন্যায্য কর্মসংস্থান বাস্তুতন্ত্র নিশ্চিত করতে এবং শ্রমিকদের অধিকারকে সম্মান করার ক্ষেত্রে কৌশলগত সহযোগিতা জোরদারে গুরুত্বারোপ করে। বৈঠক শেষে ভিডিও বার্তায় উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘আগামী কয়েক মাসে মালয়েশিয়া এক থেকে দেড় লাখ বিদেশি শ্রমিক নিতে পারে। কর্মী নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এ ব্যাপারে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। এ ছাড়াও গত বছর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বাংলাদেশ সফরে এসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, শেষ মুহূর্তে যেসব কর্মী গত বছর মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে পারেননি, তাদের প্রবেশের সুযোগ দেবেন। এ রকম কর্মী ছিলেন ১৭ হাজারের মতো। তারা বলেছেন, ব্যাচ আকারে এসব কর্মী নেওয়ার কথা জানিয়েছে মালয়েশিয়া। প্রথম ব্যাচের জন্য ইতোমধ্যে তারা ৭ হাজার ৯২৬ জনের তালিকা চূড়ান্ত করেছেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাদের মালয়েশিয়ায় কাজ করার সুযোগ দেওয়া যাবে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সব রিক্রুটিং এজেন্টকে লোক পাঠানোর সুযোগ দিতে আমরা তাদের অনুরোধ করেছি। তারা বলেছে, এটি ভালোভাবে বিবেচনা করে দেখবে। আমাদের অচিরেই তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে। এ ছাড়াও বৈঠকে নিরাপত্তাকর্মী, কেয়ারগিভার বা নার্স বাংলাদেশ থেকে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দক্ষ কর্মী নেওয়ার বিষয়ে তারা আগ্রহ দেখিয়েছেন।’ বৈঠক শেষে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী স্টিভেন সিম বলেন, মালয়েশিয়ার মাদানি কাঠামোর মধ্যে ইহসান, কেডিলান এবং কেসেহাতানের মূলনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিদেশি কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা, কল্যাণ এবং দক্ষতা প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়াতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
পরে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসিতুন ইসমাইলের সঙ্গে বৈঠক করেন আসিফ নজরুল। বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অন্য দেশের শ্রমিকরা পায় মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা, আর আমাদের শ্রমিকরা পায় সিঙ্গেল এন্ট্রি। শ্রমিকদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসার কথা বলেছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের সরাসরি কিছু বলেননি, কিন্তু তার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি মালয়েশিয়ায় যেসব কর্মী অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন, তাদের যেন নিয়মিত করা যায় সেই অনুরোধ করেছিলাম। তারা বলেছেন, মাঝে মাঝে এটা করা হয়। তবে যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, তাদের ক্ষেত্রে হয়তো এটা করা সম্ভব হবে না। আমি বলেছি, অনেক সময় মালিকের গাফিলতির কারণে, ত্রুটির কারণে এটা হয়। সেগুলো আলাদাভাবে বিবেচনা করার অনুরোধ করেছি। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এটা বিবেচনা করে দেখবেন।’