বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বস্ত্র খাতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং ঘুষের অভিযোগ তুলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) গঠনমূলকভাবে সম্পদ ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল বাজেট সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির ৪৫তম সভায় তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এনবিআর ও এফবিসিসিআই।
শওকত আজিজ রাসেল বলেন, আমাদের আগে যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক দেওয়ার পর বিটিএমএ নিজেই ছাড়পত্র দিত। তখন কোনো জটিলতা ছিল না। কিন্তু এখন এনবিআর পুরো বিষয়টি নিজের হাতে নেওয়ার পর প্রতিটি ধাপে ছাড়পত্র নিতে হয়, আর সেখানে ঘুষের কালচার গড়ে উঠেছে। ৩০ হাজার টাকার শুল্ক জমা দিতে গিয়ে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। এনবিআরের উচিত তার নিজস্ব সম্পদ গঠনমূলক কাজে ব্যবহার করা এবং ব্যবসা পরিবেশ সহজ করা। এইচএস কোড জটিলতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে বিটিএমএ সভাপতি বলেন, একই পণ্যের একাধিক এইচএস কোড থাকায় ব্যবসায়ীদের বিভ্রান্ত হতে হয়। এক পণ্যের জন্য একটি নির্দিষ্ট এইচএস কোড নির্ধারণ করে দিলে এই জটিলতা কমবে। যেভাবে তৈরি পোশাক খাতে ১২ শতাংশ কর নির্ধারণ করা হয়েছে, একই হারে বস্ত্র খাতেও কর আরোপ করা উচিত। কারণ বস্ত্র ও পোশাক খাত একে অপরের পরিপূরক। শিল্পবান্ধব ও স্বচ্ছ নীতিমালার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, শুধু নীতির কথা বললেই হবে না, প্রয়োগেও স্বচ্ছতা ও সহজীকরণ নিশ্চিত করতে হবে।
একই অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা দরকষাকষি করব। তবে পাল্টা শুল্ক ইস্যুতে তাদের চটাব না। ৯০ দিনের মধ্যে বিষয়টির সমাধান না হলে আমরা আরও সময় চাইব। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন বলেছেন, আমরা একটি বাস্তবভিত্তিক বাজেট তৈরি এবং বাজেটের ন্যায় প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছি, ব্যয়ভিত্তিক নয়। এফবিসিসিআইর প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান আগামী বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৪ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন। বর্তমানে করমুক্ত আয় ৩ লাখ ৫০ হাজার। এ ছাড়াও নারী করদাতা ও ৬৫ বছর বয়সের উর্ধ্বে করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা, সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, বিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. ময়নুল খান, বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রমুখ।