আদালতের নির্দেশে লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন খানের সম্পদ ক্রোক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা প্রশাসকের একটি টিম সুমন খানের ‘খান হোটেল’সহ কয়েকটি ভবন বুঝে নিয়ে সেখানে সরকারি ব্যানার ঝুলিয়ে দেয়।
সাখাওয়াত হোসেন সুমন লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা শহরের কালীবাড়ি মাস্টারপাড়া এলাকার মৃত বাচ্চু খানের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, জমি দখল, হুন্ডি ব্যবসা, চোরাচালান, টেন্ডারবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগে প্রায় ১৫টি মামলা রয়েছে।
এর আগে, ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিস্তার টোল প্লাজা এলাকা থেকে ঢাকাগামী স্লিপার নৈশ কোচ থেকে পুলিশের একটি টিম সুমন খানকে আটক করে। তাকে হত্যা, অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। বর্তমানে তিনি জেলহাজতে রয়েছেন।
এ বিষয়ে লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জি আর সারোয়ার জানান, আমরা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সুমন খানের বর্তমান বাড়ি, নির্মাণাধীন বাড়ি ও একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভবনগুলো বুঝে নিয়েছি এবং সেগুলোকে সরকারি মালিকানাধীন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। একজন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশিত একটি কমিটির মাধ্যমে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হবে। এ বিষয়ে সুমন খানের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, লালমনিরহাটের সুমন খানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন, ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ অর্থ, চোরাচালান, মাদক ব্যবসা, স্বর্ণ ও মুদ্রা পাচারের বিষয়ে দীর্ঘদিন অনুসন্ধান করে লালমনিরহাট সিআইডি। অনুসন্ধানে সুমন খানের ব্যাংকে ২৩৭,৪৯,৪৮,৭৬০/- (দুইশত সাঁইত্রিশ কোটি উনপঞ্চাশ লক্ষ আটচল্লিশ হাজার সাতশত ষাট) টাকা, তার স্ত্রী মোছা. নাহিদা আক্তার রুমা (৪৩)-এর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৪,৩৯,৩৫,৩১০/- (চার কোটি উনচল্লিশ লক্ষ পঁয়ত্রিশ হাজার তিনশত দশ) টাকার সন্ধান মেলে। এছাড়া সুমন খানের কর্মচারী লালমনিরহাট পুরান বাজার এলাকার বাসিন্দা হারুনের ছেলে তৌকির আহমেদ মাসুম (৩৮)-এর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৮৬,৯৫,৬২,১২৭/- (একশত ছিয়াশি কোটি পঁচানব্বই লক্ষ একষট্টি হাজার একশত সাতাশ) টাকা পাওয়া যায়। বৈধ আয়ের উৎস না থাকলেও তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থের জমা, স্থানান্তর ও রূপান্তর করা হয়। এসব অপরাধে ২০১৫ সালের মানি লন্ডারিং আইনের ৪(২) ধারায় তাদের তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল