রংপুরের প্রাচীন স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম মিঠাপুকুর মসজিদ। এটি মিঠাপুকুর বড় মসজিদ নামে পরিচিত। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে এশিয়ান হাইওয়ের উত্তর-পশ্চিম পাশে মসজিদটির অবস্থান। ২১৫ বছর আগে নির্মিত মসজিদটি এখনো দর্শনার্থীর নজর কাড়ছে। মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত হলেও নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার জন্য নেই কোনো জনবল।
মসজিদের প্রবেশদ্বারে লাগানো তথ্য থেকে জানা গেছে, মসজিদটি ১২২৬ হিজরি, ১২১৭ বঙ্গাব্দ এবং ১৮১১ খ্রিস্টাব্দে জনৈক শেখ মোহাম্মদ মোয়াজ্জমের প্রপৌত্র শেখ মুহাম্মদ আসিন (পিতা শেখ মোহাম্মদ সাবের) কর্তৃক এটি নির্মিত হয়। মসজিদ থেকে একটু দূরে জলাশয় রয়েছে। মসজিদটি তিনটি গোলাকার গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। মসজিদের চারপাশে রয়েছে সুরম্য গেটসহ অনেক পুরোনো দেয়াল। দেয়ালের অভ্যন্তরে খোলা আঙিনা। মসজিদের চার কোনায় পিলারের ওপর রয়েছে চারটি মিনার। মিনারগুলো আট কোণাকারে নির্মিত। মিনারগুলো ছাদের কিছু ওপরে উঠে গম্বুজ আকৃতিতে শেষ হয়েছে। মসজিদে প্রবেশের জন্য রয়েছে কারুকার্যখচিত তিনটি প্রবেশপথ। মসজিদের মাঝের প্রবেশপথের দুই পাশের পিলারের ওপরও রয়েছে ছোট দুটি মিনার। সামনের অংশে পোড়ামাটির কারুকার্য মসজিদটি আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে। মসজিদের ভেতরে সামনের দরজাবরাবর পশ্চিম দেয়ালে রয়েছে তিনটি মেহরাব।
প্রবেশপথেও রয়েছে কারুকাজের ছাপ। মসজিদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো কন্দকারে নির্মিত সুবিশাল তিনটি গম্বুজ। এ ছাড়া চার কোণের উঁচু ছাদ। এখানে তিনটি অংশে মসজিদ ভাগ করে বৃত্তাকার গম্বুজ ও প্যারাপুলি দেয়াল নির্মিত হয়। গম্বুজগুলো সুন্দর প্যানেল, লতাপাতা, ফুল, জ্যামিতিক আকার। দেখতে ড্রামস এবং দেয়ালের শিলালিপির মতো।
মসজিদের ইমাম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমি এখানে দুই মাস ধরে নামাজ পড়াচ্ছি, আজানও দিই। ভিতরে এক কাতারে ১৭-১৮ জন নামাজ পড়তে পারে।’ প্রত্নতত্ত্ব¡ অধিদপ্তর রাজশাহী ও রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের আঞ্চলিক কর্মকর্তা এ কে এম সাইফুর রহমান বলেন, ‘২১৫ বছরের প্রাচীন এ মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার জন্য অনিয়মিত শ্রমিক নেওয়া হয়।’ তিনি বলেন, ‘এ অঞ্চলের প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য পাঁচ বছরের একটি পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।’