নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হাত থেকে ছাত্র-জনতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। তিনি বলেন, সরকার তাদের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হলে ছাত্র-জনতা জুলাই-আগস্টের মতোই আবারও রাজপথে নেমে ছাত্রলীগকে প্রতিরোধ করবে। গতকাল দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দীর্ঘ এক পোস্টে নাছির উদ্দীন এ কথা বলেন। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর আক্রমণকারী প্রতিটি ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।
নিষিদ্ধ সংগঠনের সব কর্মসূচি এবং গোপন তৎপরতা প্রতিহত করার দায়িত্ব সরকারের।
তার পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো : জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যে ২ হাজারের অধিক মুক্তিকামী মানুষ শহীদ হয়েছেন, তাদের সবাইকে পুলিশ বা সরকারি বাহিনী হত্যা করেনি। নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের ক্যাডাররা প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে অসংখ্য মানুষ খুন করেছে। জুলাই-আগস্টের গণ অভ্যুত্থান চলাকালীন গণহত্যায় ফ্যাসিস্ট পলাতক খুনি হাসিনার নির্দেশে কসাই-জল্লাদের ভূমিকা পালন করেছে ছাত্রলীগ। গণহত্যার আগেও সারা দেশে বিশ্বজিৎ-আবরার থেকে শুরু করে ছাত্রলীগ যত হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে, সব নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন মিলেও এত মানুষ খুন করেনি।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্রলীগকে নামেমাত্র নিষিদ্ধ করে দায় সেরেছে। ছাত্রলীগের খুনি, সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনার কোনো জোরালো তৎপরতা গ্রহণ করেনি। ছাত্রলীগের শীর্ষ কোনো নেতাকে বা সন্ত্রাসী ক্যাডারকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ছাত্রজনতা নিজেরা কয়েকজনকে আইনের হাতে তুলে দিয়েছে। সরকারের এই ব্যর্থতার কারণেই নিষিদ্ধ খুনি সংগঠন ছাত্রলীগ প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করার সাহস পেয়েছে। খুনিদের বিচারের ক্ষেত্রে সরকারের নির্লিপ্ত আচরণের কারণেই তারা আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে চাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হাত থেকে ছাত্র-জনতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বও সরকারের। সরকার তাদের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হলে ছাত্র-জনতা জুলাই-আগস্টের মতোই আবারও রাজপথে নেমে ছাত্রলীগকে প্রতিরোধ করবে।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সারা দেশে ছাত্র-জনতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে প্রতিরোধ করতে প্রস্তুত। শহীদ আবু সাঈদ, ওয়াসিম আকরাম, মুগ্ধ, রাব্বি, রিয়া গোপ, রিদয় তারুয়াসহ হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণ অভ্যুত্থানের সফলতা অক্ষুণœ রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আমরা জুলাই-আগস্টের বীর শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। ইনশাআল্লাহ। সবশেষে তিনি লিখেন- ‘মোদের মৃত্যু লেখে মোদের জীবন-ইতিহাস! হাসির দেশে আমরা আনি সর্বনাশী চোখের জল, আমরা ছাত্রদল’।