রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে এক নবজাতকের বিছানায় রাখা হয়েছে আরও তিন শিশুকে। ফলে শিশুর অভিভাবকরা দাঁড়িয়ে আছেন পাশে। শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুর মা সুমিত্রা রানী বলছিলেন, ‘অনেক কষ্ট হয় দাঁড়িয়ে থাকতে। কয়েকদিন আগেই তো সিজার করে বাচ্চা হয়েছে। এখন আমি নিজেই রোগী। কিন্তু শিশুর জন্য আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। ছোট একটা টুল কিনে এনেছি। সেটিতে মাঝে-মধ্যে বসি। শিশুকে খাওয়ানোর সময় বসতে হয়। রামেক হাসপাতালে এমন চিত্র বছরজুড়েই। তবে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এ সমস্যা আরও প্রকট আকার ধারণ করে। সারা বছর যখন রামেক হাসপাতালে রোগীর সংকুলান হচ্ছে না, ঠিক তখন রামেক হাসপাতালের কিছুটা দূরেই রাজশাহী শিশু হাসপাতাল অলস দাঁড়িয়ে আছে। নির্মাণকাজ শেষে হাসপাতালটি উদ্বোধনের প্রায় দুই বছর পার হলেও এটি এখনো চালু হয়নি। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শাহিদা ইয়াসমিন জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শিশু বিভাগে রোগী ছিল ৪৫২ জন। অথচ এই বিভাগে শয্যা সংখ্যা মাত্র ১৫০। চিকিৎসকসহ সব মিলিয়ে ৪৩ জন। তবে সার্বক্ষণিক থাকেন ১৬ জন। রাতে দুজন ও সন্ধ্যায় চারজন চিকিৎসক সামাল দেন এসব রোগী।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী ফরহাদ সরকার বলেন, ‘২০২৪ সালের জুন মাসে হাসপাতাল ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়। পরে রাজশাহী পিডব্লিউডি-২-এর কর্মকর্তাদের কাছে একাধিকবার চিঠি দিয়ে ভবনটি হস্তান্তরের অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ এখনো ভবনটি দখলে নেয়নি। আমরা আমাদের নিজস্ব খরচে সরকারি স্থাপনা পাহারা দিচ্ছি।’
সদ্য বদলি হওয়া সিভিল সার্জন ডা. আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক জানান, শিশু হাসপাতালটি চালু করতে কয়েক মাস আগে তারা প্রয়োজনীয় জনবল ও সরঞ্জাম চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এখনো পর্যন্ত কিছু জানায়নি।