একবার ব্যবহারযোগ্য (ওয়ান টাইম) প্লাস্টিক বন্ধ হলে প্লাস্টিক খাতের ৬ হাজার শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চাকরি হারাবেন কয়েক লাখ শ্রমিক। পাশাপাশি একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের তালিকায় এমন কিছু পণ্য আছে, যার সঙ্গে জড়িত আরও লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থান এবং ১৩ লাখ ক্ষুদ্র বিক্রেতার জীবিকা। এর সঙ্গে সরকার বছরে রাজস্ব হারাবে ৪০ হাজার কোটি টাকার। গতকাল বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ) সভাপতি সামিম আহমেদ লিখিত বক্তব্যে এসব তথ্য জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিপিজিএমইএর সাবেক সভাপতি এ এস এম কামাল উদ্দিন, ফেরদৌস ওয়াহেদ, সিনিয়র সহসভাপতি কে এম ইকবাল হোসেন, কাজী আনোয়ারুল হক প্রমুখ।
, পরিচালক সৈয়দ নাসির উদ্দিন, ঝন্টু কুমার সাহা, বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বিপিজিএমইএ সভাপতি সামিম আহমেদ বলেন, বিগত বছরে ১৭টি একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্য বন্ধ করতে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। সরকারের এই প্রচেষ্টার ফলে প্লাস্টিক খাতের ব্যবসাবাণিজ্য এবং লিঙ্কেজ হিসেবে অন্যান্য খাতের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সামিম আহমেদ আরও বলেন, দেশের পরিবেশ দূষণমুক্ত করা এবং পরিবেশ উন্নয়নে ২০০২ সালে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্লাস্টিকের শপিং ব্যাগ বন্ধ করে দেয় পরিবেশ মন্ত্রণালয়। এতে প্লাস্টিকের শপিং ব্যাগ প্রস্তুতকারক ৩০০ বড় কারখানা যারা বিপিজিএমইএর সদস্য ছিলেন, তারা কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হন। এতে শত কোটি টাকার বিনিয়োগ নষ্ট হয়। শ্রমিকরা কাজ হারান। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে প্লাস্টিকের শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয় তা কিন্তু কোনো সুফল বয়ে আনেনি। সাশ্রয়ী মূল্য, গুণগত মান এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য শপিং ব্যাগের বিকল্প পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময় এক প্রজ্ঞাপনে পাটের ব্যাগ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়। এর ফলে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও কম মূল্যের পিপি ওভেন ব্যাগ মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়। পাটের ব্যাগের মূল্য পিপি ওভেন ব্যাগের চেয়ে অনেক বেশি। পাটের ব্যাগের মূল্য বেশি হওয়ায় সব নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে পণ্যের গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে ব্যাগের সরবরাহ স্বল্পতার কারণে সাপ্লাই চেইন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
প্লাস্টিক প্যাকেজিং পরিহার করা হলে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, ওষুধশিল্প ও হাসপাতালের সরঞ্জামাদি, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ ও রপ্তানি পণ্য প্রক্রিয়াকরণ খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ সময় একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধ না করে বিকল্প কিছু প্রস্তাবনা দেয় বিপিজিএমইএ।