গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত এক বছরের অর্জন, আসন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রস্তুতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরতে সাংবাদিক সম্মেলন ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সুফিয়া কামাল অডিটোরিয়ামে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক এবং ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. সফিউল ইসলাম আফ্রাদ। সভাপতিত্ব করেন বহিরাঙ্গন কেন্দ্রের পরিচালক প্রফেসর ড. ফারহানা ইয়াসমিন। স্বাগত বক্তব্য দেন রেজিস্ট্রার মো. আবদুল্লাহ মৃধা।
পরবর্তীতে উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন এবং আগামী ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিতব্য দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ঘোষণা দেন। সম্মেলনের শিরোনাম— “টেকসই খাদ্য নিরাপত্তার জন্য পুনরুজ্জীবনশীল কৃষি” (Regenerative Agriculture for Sustainable Food Security)। এতে অংশ নেবেন দেশি-বিদেশি গবেষক, কৃষি বিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারক ও কৃষক প্রতিনিধিরা।
উপাচার্য জানান, সম্মেলনের লক্ষ্য হলো মাটির স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং জলবায়ু সহনশীল খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুনর্জীবনমুখী কৃষি চর্চার বিকাশ ঘটানো।
গত এক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অর্জন তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ২৭ অক্টোবর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা, রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ ও আধুনিক শিক্ষার মডেল বাস্তবায়নে আমরা উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছি।
উল্লেখযোগ্য অর্জনের মধ্যে রয়েছে— প্রশাসনিক ভবন চত্বরকে ‘৩৬ জুলাই চত্বর’ ঘোষণা, শহিদ পরিবারের সহায়তা প্রদান, বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজনীতিমুক্ত রাখার ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা, টাইমস হায়ার এডুকেশন (THE) র্যাঙ্কিং ২০২৬-এ বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিংস ফর ইনোভেশন (WURI) ২০২৫-এ দেশে প্রথম ও বিশ্বে ৭৭তম স্থান, বিশ্বব্যাংক ও ইউজিসির যৌথ ‘হিট প্রকল্পে’ গৃহীত ৮টি প্রস্তাবনা, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাফল্য।
এছাড়া জাপান, কানাডা, চীন, বতসোয়ানা ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে একাধিক সহযোগিতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বহিরাঙ্গন কেন্দ্রের কার্যক্রম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি টেকনোলজি ভিলেজের মাধ্যমে কৃষক, উদ্যোক্তা ও সাধারণ মানুষ নিয়মিতভাবে উপকৃত হচ্ছেন। ভেটেরিনারি টিচিং হসপিটালের মাধ্যমে গবাদি ও পোষা প্রাণির চিকিৎসা সেবা এবং মোবাইল মিল্ক টেস্টিং ল্যাবরেটরির মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে সেবা কার্যক্রমও বৃদ্ধি পেয়েছে।
গবেষণা, বৃক্ষরোপণ, টেকসই কৃষি প্রযুক্তি ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং প্রকৃতি সংরক্ষণে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে বলেও উপাচার্য জানান।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল