জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আয়োজনে পূর্ব ঘোষিত ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচি পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার পর রাজধানীর তাঁতি বাজার মোড়ে গিয়ে এটি পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদল দুটি দূতাবাসে স্মারকলিপি প্রদান করে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বর থেকে লংমার্চ নিয়ে মার্কিন দূতাবাস অভিমুখে যাত্রা করে। এটি তাঁতি বাজার মোড়ে গিয়ে পুলিশের বাধায় পড়লে পুনরায় ক্যাম্পাসে ফিরে আসে।
এর আগে লংমার্চটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শুরু হয়ে ভিক্টোরিয়া পার্ক, শাখাঁরী বাজার, রায়সাহেব বাজার মোড় হয়ে তাঁতি বাজার গিয়ে পৌঁছায়। কিন্তু পুলিশের বাধায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসতে হয়। এরপর ক্যাম্পাসে রফিক ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয় কর্মসূচি।
এ সময় ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে ‘তুমি কে আমি কে, প্যালেস্টাইন প্যালেস্টাইন’,‘ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ কর, বন্ধ কর’,‘উহুদের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’,‘জাতিসংঘ জবাব চাই, ওআইসি জবাব চাই’, ‘ইসরায়েল নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্তি পাক’ সহ বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দেওয়া হয়।
এদিকে সমাবেশ শেষে অধ্যাপক মোহাম্মদ বিল্লাল হোসাইনের নেতৃত্বে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের দূতাবাস এবং বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি রাকিব বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানাই—সরকারিভাবে ইসরায়েলি পণ্য বয়কট করুন। না হলে জনগণ নিজেরাই তা বয়কট করবে। একইসঙ্গে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করে ইসরায়েলি পণ্যের বিকল্প উৎপাদন করতে হবে।
জবি শাখা শিবিরের সেক্রেটারি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, আমরা মুসলিম জাতি, খালিদ বিন ওয়ালিদের উত্তরসূরি। কিন্তু আমরা তা ভুলে গেছি। আজ আমরা শুধু ফতোয়াবাজিতে ব্যস্ত, যার সুযোগে ইহুদি-খ্রিস্টানরা মুসলিম ভাইবোনদের হত্যা করছে। আমি মুসলিম যুবকদের জাগরণের আহ্বান জানাচ্ছি।
জবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ইসরায়েলের আগ্রাসন যুগের পর যুগ ধরে চলছে। স্বাধীনতার নামে তারা ফিলিস্তিনে নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে। তথাকথিত শান্তিকামী জাতিসংঘ, ওআইসি এবং পশ্চিমা বিশ্ব চুপ করে আছে বলেই এই আগ্রাসন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দীন বলেন, ইসরায়েলি গণহত্যার মদদদাতা যুক্তরাষ্ট্র। এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধে আমরা মার্কিন দূতাবাসে স্মারকলিপি দেব। একইসঙ্গে সৌদি আরবের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কারণে তাদের দূতাবাস এবং বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
তিনি আরও বলেন, দরকাল হলে আমরা আগামীতে বাংলাদেশে জাতিসংঘের মিশন ঘেরাও করব। আজকের সমাবেশ থেকে আমরা ইসরায়েলের সকল পণ্য বর্জনের ঘোষণা করার জন্য সকলকে জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিডি প্রতিদিন/একেএ