সাগর নয় তবুও নাম তার রামসাগর। মধ্যযুগের বিখ্যাত সামন্ত রাজার অমর কীর্তি দিনাজপুরের রামসাগর যা সারা বাংলার এক সৌন্দর্যমণ্ডিত ঐতিহাসিক দীঘি। প্রাকৃতিক অপরূপ নয়নাভিরাম দীঘিটি পর্যটকদের মনকে ছুঁয়ে যায় ভালো লাগার পরশে। আর মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে এখানে সবার দৃষ্টি কাড়ে রামসাগর জাতীয় উদ্যানের মিনি চিড়িয়াখানার মায়াবী চিত্রা হরিণগুলো।
এবার প্রাকৃতিক অপরূপ নয়নাভিরাম দিনাজপুরের ঐতিহাসিক রামসাগরের মিনি চিড়িয়াখানায় মায়াবী চিত্রা হরিণের সংসারে ৫টি নতুন অতিথি এসেছে। হালকা মিষ্টি রোদের আলোয় নতুন অতিথিদের নিয়ে ছুটোছুটি করছে মায়াবী চিত্রা হরিণ দল। যা দর্শানার্থীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পর্যটকদের দৃষ্টি কেড়েছে। আসছে ঈদে ভিড় বাড়বে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দর্শনার্থীদের।
ঐতিহাসিক রামসাগর জাতীয় উদ্যানের মিনি চিড়িয়াখানায় এখন ৩৮টি চিত্রা হরিণ পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণ বাড়িয়েছে। মুক্ত পরিবেশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মায়াবী চিত্রা হরিণের পাল। এছাড়াও মিনি চিড়িয়াখানায় রয়েছে অজগড় সাপ, একটি হনুমান, ৭টি বানরসহ বন্যপ্রাণী। মিনি চিড়িয়াখানার এসব প্রাণী দেখভাল করেন বনবিভাগের বাবুল। তিনি জানান, চিত্রা হরিণ ছিল ৩৮টি এবং এ মার্চ পর্যন্ত ৫টি হরিন শাবক জন্ম দিয়েছে। তবে আরও ২/৩টি হরিণ শাবক জন্ম নিতে পারে বলে জানান তিনি।
চিড়িয়াখানার মায়াবী চিত্রা হরিণের সংসারে শীত মওসুমের শেষে আসে নতুন অতিথি। এখন মিনি চিড়িয়াখানায় নতুন অতিথিসহ মোট ৪৩টি মায়াবী চিত্রা হরিণ। দিন দিন সংখ্যা বাড়ছেই এসব হরিণের। আরও কিছু মা হরিণ গর্ভধারণ করেছে।
দিনাজপুর বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা ও রামসাগর জাতীয় উদ্যানের তত্ত্বাবধায়ক মো. আব্দুল মান্নান জানান, চিত্রা হরিনগুলোর খাদ্যের জন্য খাদ্য বাজেট আসে। বাজেটের জন্য টেন্ডার হয়। ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। খাদ্যের কোন সমস্যা নেই। চিত্রা হরিণগুলোকে ছোলা, নেপিয়ার ঘাস, গমের ভূসি, ভূট্টা ভাঙ্গা, চক্কর, লতাপাতা ইত্যাদি খাবার দেয়া হয়।
তিনি আরও জানান, রামসাগরের চারপাশে বাউন্ডারী ওয়ালের বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে গেছে। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব দেয়া আছে। বরাদ্দ এলে এটাকে দর্শনীয় করতে কাজ করা হবে।
উল্লেখ্য, রামসাগর জাতীয় উদ্যানের চিড়িয়াখানায় সরকারিভাবে প্রথম ৬টি চিত্রা হরিণ আনা হয়। গত বছরের চট্টগামের সাফারি পার্কে ৫০টি হরিণ নিয়ে গেছে। হরিণগুলো দ্রুত বংশবিস্তারে বাড়তে বাড়তে এদের সংখ্যা নতুন অতিথিসহ এখন ৪৩টি।
বনবিভাগের কয়েকজন জানায়, চিত্রা হরিণের প্রিয় খাবার শাপলা পাতা। রামসাগর দিঘিতে শাপলা চাষ করতে পারলে হরিণের খাদ্য চাহিদা কিছুটা মেটানো সম্ভব হতো। কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে রামসাগর দিঘিতে মাছ শিকার, ইঞ্জিন নৌকা চালানোর কারণে শাপলা চাষ বন্ধ হয়ে যায়। আবার রামসাগরের জলরাশির দেখভাল করে জেলা প্রশাসন।
বিডি প্রতিদিন/এএ