চীন বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত নিউট্রিনো (ঘোস্ট পার্টিকলও বলা হয়) শনাক্তকরণ গবেষণাগার চালু করেছে। গবেষণাগারটির নাম জিয়াংমেন আন্ডারগ্রাউন্ড নিউট্রিনো অবজারভেটরি (জুনো । এটি গুয়াংডং প্রদেশে ৭০০ মিটার ভূগর্ভে নির্মিত হয়েছে।
এই গবেষণাগারে রয়েছে ৩৫ মিটার চওড়া একটি বিশাল অ্যাক্রিলিক গোলক। সেখানে ২০ হাজার টন তরল রাখা হয়েছে। চারপাশে রয়েছে ৪৪ মিটার গভীর পানির পুল। এখানেই নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্র তাইশান ও ইয়াংজিয়াং থেকে প্রায় ৫৩ কিলোমিটার দূরে উৎপন্ন নিউট্রিনো শনাক্ত করা হবে।
নিউট্রিনো এমন এক ধরনের মৌলিক কণা, যাদের কোনো বৈদ্যুতিক চার্জ নেই, ভর প্রায় নেই বললেই চলে এবং তারা আলোর গতির কাছাকাছি বেগে চলাচল করে। এরা সাধারণ বস্তু ভেদ করে চলে যায়, এমনকি মানুষের শরীর, ভবন বা পুরো পৃথিবীর মধ্য দিয়েও পার হয়ে যেতে পারে। এজন্য এদেরকে ‘ঘোস্ট পার্টিকল’ বলা হয়।
চীনের চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেসের ইনস্টিটিউট অব হাই এনার্জি ফিজিক্স’ এ গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছে। প্রকল্পটির মুখপাত্র পদার্থবিজ্ঞানী ওয়াং ইফাং বলেছেন, জুনো চালু হওয়া বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এক ‘ঐতিহাসিক মাইলফলক’।
প্রকল্পটি প্রথম প্রস্তাব করা হয় ২০০৮ সালে। এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা নিউট্রিনোর ভর ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে নতুন তথ্য পেতে পারবেন। জুনো শুধু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে নির্গত কণাই নয়, বরং সূর্য, সুপারনোভা (মহাবিশ্বে নক্ষত্র বিস্ফোরণ), বায়ুমণ্ডল ও পৃথিবী থেকেও আসা নিউট্রিনো শনাক্ত করতে সক্ষম হবে।
বিজ্ঞানীদের মতে, এত বড় ও উন্নতমানের ডিটেক্টরের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো নিউট্রিনো নিয়ে গভীর গবেষণা শুরু হলো। এটি ভবিষ্যতে মহাবিশ্ব ও পদার্থের প্রকৃত স্বরূপ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর দিতে সাহায্য করবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল