অপরাধে ব্যবহৃত তথ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে না দেওয়ার অভিযোগে টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের কল পরিষেবায় আংশিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে রাশিয়া। দেশটির ডিজিটাল উন্নয়ন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সন্ত্রাস ও প্রতারণা রুখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্সকে যোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা রসকোমনাডজোর জানায়, বিদেশি মেসেঞ্জার অ্যাপগুলোর কল সুবিধা সীমিত করা হলেও অন্যান্য ফিচার চালু আছে। মেটা প্ল্যাটফর্মস ও টেলিগ্রাম তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
টেলিগ্রাম জানিয়েছে, সহিংসতা ও প্রতারণার বিরুদ্ধে তারা কঠোর অবস্থানে আছে এবং প্রতিদিন এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে লাখ লাখ সন্দেহজনক বার্তা মুছে দিচ্ছে। তবে ১১ আগস্ট থেকে রাশিয়ার ব্যবহারকারীরা টেলিগ্রামে কল করতে পারছেন না, আর হোয়াটসঅ্যাপে কল দিলে মাঝে মাঝে ধাতব ধরনের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
মন্ত্রণালয়ের দাবি, একাধিকবার অনুরোধের পরও প্ল্যাটফর্ম দুটি অপরাধ ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। রুশ আইন মেনে চলা, দেশে অফিস খোলা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে।
রাশিয়ার সংসদীয় কমিটির উপপ্রধান আন্তন গোরেলকিন বলেন, রুশ আইন পুরোপুরি মানলেই কেবল এ বিধিনিষেধ প্রত্যাহার হবে। ২০২২ সালে মেটাকে ‘চরমপন্থী সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার চলছিল, যদিও নিষিদ্ধ তথ্য না সরানোর কারণে একাধিকবার শাস্তি দেওয়া হয়েছে। গত মাসে গোরেলকিন সতর্ক করেন, হোয়াটসঅ্যাপকে রাশিয়ার বাজার ছাড়ার প্রস্তুতি নিতে হবে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি রাষ্ট্র-সমর্থিত মেসেঞ্জার অ্যাপ তৈরির অনুমোদন দিয়েছেন, যা সরকারি সেবার সঙ্গে যুক্ত থাকবে। এর লক্ষ্য ‘ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব’ নিশ্চিত করা এবং বিদেশি অ্যাপের ওপর নির্ভরতা কমানো। সমালোচকেরা আশঙ্কা করছেন, নতুন অ্যাপে নজরদারি বাড়বে এবং গোপনীয়তা লঙ্ঘন হবে। কেউ কেউ মনে করছেন, ইচ্ছাকৃতভাবে হোয়াটসঅ্যাপের গতি কমিয়ে ব্যবহারকারীদের নতুন অ্যাপে ঠেলে দেওয়া হতে পারে।
গত মাসে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, রাশিয়া ইন্টারনেট অবকাঠামোর ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াচ্ছে, যাতে সরকারবিরোধী ওয়েবসাইট ও সেন্সরশিপ এড়ানোর টুল সহজেই ব্লক বা ধীরগতি করা যায়।
বিডি প্রতিদিন/আশিক