জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তি করার প্রতিবেদন ১৫ দিন পরপর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেই সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তির বিষয়ে মাঠ কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ড মনিটরিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক্ষেত্রে ১৫ দিন পরপর কোনো কর্মকর্তা কত আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন, সেই প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সব আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। ইসির এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক মো. আবদুল হালিম খান ইতোমধ্যে নির্দেশনাটি মাঠ কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে প্রতি ১৫ দিন অন্তর অন্তর কাজের অগ্রগতি সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করবেন। আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা অগ্রগতি প্রতিবেদন একীভূত করে পরিচালকের কাছে পাঠাবেন। পরিচালক সামগ্রিক কার্যক্রম মনিটরিং এবং প্রতি ১৫ দিন অন্তর অন্তর কাজের অগ্রগতি প্রতিবেদন মহাপরিচালকের কাছে উপস্থাপন করবেন।
মাঠ কর্মকর্তাদের দপ্তরে চার লাখের মতো এনআইডি আবেদন ঝুলে আছে বলে জানা গেছে। আর জুনের মধ্যেই সেগুলোর নিষ্পত্তি সম্পন্ন করতে চায় ইসি। এনআইডি মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর এ বিষয়ে বলেন, আমাদের আঞ্চলিক পর্যায়ে ক্যাটাগরি (আবেদনের ধরন) করার ক্ষমতা দেওয়া আছে। আমরা মনিটরিং করছি। অনেকেই হয়তো ক্যাটাগরি ঠিক মতো করছেন কেউ করছে না।
এনআইডি সেবা এবার শুরু হচ্ছে কানাডায় : জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর বলেছেন, এনআইডি সেবা দুর্ভোগ কমাতে নিজেদের নানা পদক্ষেপের পাশাপাশি গণমাধ্যমসহ সুধীজনের সঙ্গে বসার পরিকল্পনা রয়েছে। সেই সঙ্গে দ্বৈত এনআইডিধারীদের প্রথমটি রেখে দ্বিতীয়টি বাতিল ও রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার প্রবণতা ঠেকাতে আঙুলের ছাপ যাচাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, প্রবাসে এনআইডি সেবা চালুর উদ্যোগে এবার কানাডায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিবন্ধন কাজ শুরু করা হবে। প্রবাসী ভোটার আমরা অস্ট্রেলিয়াতে চালু করেছি। সেখানে নিয়মিত ভোটার হচ্ছে। এখন আটটি দেশে চলছে। আগামী সপ্তাহ নাগাদ কানাডায় শুরু হবে। তখন নয়টা দেশ হবে।
বর্তমানে সাড়ে ১২ কোটিরও বেশি নাগরিকের তথ্য রয়েছে এনআইডি ডেটাবেজে। ভোটার হওয়ার পাশাপাশি প্রতিনিধি এনআইডির নামের বানান, বয়সসহ নানা ধরনের তথ্য সংশোধন নিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। জেলা, উপজেলা, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও এনআইডি উইং ডিজির অনুমোদনে চার ধরনের সংশোধন নিষ্পত্তি করা হয়। এনআইডি উইং ডিজি এ এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, এনআইডি সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে প্রাথমিক যে সিদ্ধান্ত হয়েছে মিডিয়ার লোকদের নিয়ে সেমিনারে রাখব। যে কর্মকর্তা সহজীকরণের চিন্তাভাবনা করেন তাদের রাখব। এর বাইরে আমরা সুধীজনকে রাখব। এ মতবিনিময় এ মাসের মধ্যে হতে পারে বলে জানান তিনি। দুর্ভোগ কমানোর প্রসঙ্গ টেনে ডিজি বলেন, জেলাপর্যায়ে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা পর্যায়ে এনআইডি সংশোধনের যে ক্ষমতা ছিল (গ ক্যাটাগরি) সেটা জেলা অফিসারকেও দায়িত্ব দিচ্ছি। মানুষের সেবা নিশ্চিত করার জন্য যৌক্তিক আবেদন যেগুলো, কমিশন দ্রুত অনুমোদন দিচ্ছে। কমিশন ও সচিবালয় আমরা সবাই মিলে মানুষকে দ্রুত সেবা দিতে চাই। আর আমাদের এনআইডি অনুবিভাগে প্রচুর আবেদন ঝুলে আছে। এগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি করতে পারি সেজন্য দায়িত্ব বণ্টন করে দিচ্ছি।