বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে এক সমঝোতার আওতায় মিনস্ক তাদের কারাগার থেকে কয়েক ডজন রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন নেতা, সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্টসহ মোট ৫২ জন ছাড়া পেলেও এখনো হাজারের বেশি রাজনৈতিক বন্দি বেলারুশের কারাগারে আছেন। এদের মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা বেলারুশের এয়ারলাইনস বেলাভিয়ার ওপর থাকা কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে, যাতে তারা বিমানের জন্য যন্ত্রাংশ কিনতে পারে। বেলারুশ ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়ার মধ্যে হতে যাওয়া এক যৌথ সামরিক মহড়ার প্রাক্কালে এ বন্দিদের ছাড়া হলো- বলছে বিবিসি। ১৯৯৪ সাল থেকে বেলারুশ শাসন করে আসা ৭১ বছর বয়সি লুকাশেঙ্কো বলেছেন, মানবিক কারণে এই বন্দিদের ছাড়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার তিনি রাজধানী মিনস্কে ট্রাম্পের বিশেষ দূত জন কোলের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। তারা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও মিনস্কে ফের যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস খোলা নিয়ে কথা বলেছেন।-রয়টার্স
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে তার ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর সময় বেলারুশের ভূখণ্ড ব্যবহার করায় যুক্তরাষ্ট্র মিনস্কে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছিল। কোল বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, তারিখ ঠিক না হলেও বেলারুশে মার্কিন দূতাবাস ‘খুব তাড়াতাড়িই’ খুলবে। বেলারুশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মজবুত অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী। ইউক্রেনে যুদ্ধ করা রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় পশ্চিমাদের অনেক নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশটি এমনিতেই চাপের মুখে রয়েছে। বন্দি মুক্তির বিনিময়ে বেলারুশের জাতীয় এয়ারলাইনস বেলাভিয়ার ওপরে থাকা কিছু বিধিনিষেধ তুলতে যুক্তরাষ্ট্র রাজি হয়েছে- বলছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। ২০২১ সালে গ্রিস থেকে লিথুয়ানিয়াগামী রায়ান এয়ারের একটি উড়োজাহাজকে বেলারুশের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ মিনস্কে নামতে বাধ্য করার পর পুলিশ ওই উড়োজাহাজ থেকে সাংবাদিক রোমান প্রোতাসেভিচকে গ্রেপ্তার করেছিল। ওই ঘটনার পর বেলাভিয়ার ওপর পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। বিবিসি লিখেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার আশায় বেলারুশ ২০২৩ সালের জুলাই থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে তিন শর বেশি বন্দিকে মুক্তি দিল। বৃহস্পতিবার ছাড়া পাওয়া বন্দিদের মধ্যে ৬৯ বছর বয়সি দার্শনিক ভ্লাদিমির মাৎস্কেভিচ, সাংবাদিক ইগর লোসিক ও বিরোধী রাজনীতিক মিকোলা স্টাৎকেভিচও আছেন। স্টাৎকেভিচ ২০১০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।