বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ইউরোপের দেশ ফ্রান্স। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর পদত্যাগের দাবি, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং পরিকল্পিত বাজেট কর্তনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে এ বিক্ষোভ চলছে। গতকাল বিক্ষোভকারীরা যান চলাচল ব্যাহত করেছে, আবর্জনার পাত্র পুড়িয়েছে, এমনকি পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়িয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশজুড়ে মোতায়েন করা হাজার হাজার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সড়ক থেকে ব্লকেডগুলো তুলে নিয়েছে। সারা দেশে প্রায় ৩০০ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার দেশটির সংসদের বিরোধী দল ম্যাক্রোঁর সরকারকে পরাজিত করার জন্য একত্রিত হয়। এর ফলে রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখোমুখি হয়েছেন প্রেসিডেন্ট। এরই মধ্যে ম্যাক্রোঁ তার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘনিষ্ঠ মিত্র সেবাস্তিয়ান লেকর্নুকে নিয়োগ দিয়েছেন। গতকাল অনেক বিক্ষোভকারী ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সিজিটি ইউনিয়নের আরএটিপি পাবলিক ট্রান্সপোর্ট শাখার প্রতিনিধি ফ্রেড প্যারিসে এক বিক্ষোভে বলেছেন, ‘এটি একই রকম, এটি একই রকম, সমস্যা ম্যাক্রোঁর, মন্ত্রীদের নয়। তাকে বিদায় নিতে হবে।’ প্যারিসে পুলিশ একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশপথ অবরোধকারী যুবকদের ওপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। পরে দমকলকর্মীরা ব্যারিকেড থেকে পোড়া জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা শহরের গ্যারে ডু নর্ড ট্রেন স্টেশনে প্রায় ১ হাজার বিক্ষোভকারীর একটি বিশাল দলকে প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছে।-রয়টার্স
গ্যারে ডু নর্ডের কাছে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে থাকা ১৮ বছর বয়সি শিক্ষার্থী লিসা ভেনিয়ার বলেন, ‘আমি (সংসদ) ভেঙে দেওয়ার অথবা বামপন্থি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আশা করছিলাম। তবে কোনোটিই হয়নি, এটি হতাশাজনক।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রিটেইলউ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর রেনেসে বিক্ষোভকারীরা একটি বাসে আগুন দিয়েছে। কিছু বিক্ষোভকারী ভারী পাথর ছুড়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ করেছে। বিশেষজ্ঞ ও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘ব্লক এভরিথিং’ আন্দোলন-অসন্তোষের একটি বিস্তৃত প্রকাশ, যার কোনো কেন্দ্রীভূত নেতৃত্ব নেই। এ আন্দোলন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অ্যাডহক পদ্ধতিতে সংগঠিত, যা মে মাসে অনলাইনে ডানপন্থি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে উত্থিত হয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে বাম এবং অতি-বামপন্থিরা এটি দখল করে নিয়েছে।