প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে লস অ্যাঞ্জেলেস, নিউইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া, ডালাস, ওয়াশিংটন ডিসি, মিশিগান, শিকাগোসহ ৫০ স্টেটে একযোগে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ চলার মধ্যেই রবিবার ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটশাসিত সিটিসমূহে গ্রেপ্তার অভিযান আরও জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে নগদ ১ হাজার ডলারসহ ফিরে যাওয়ার টিকিট প্রদানের সরকারি ঘোষণার পর ১০ লাখের অধিক অবৈধ অভিবাসী এরই মধ্যে স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র ছেড়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় উল্লেখ করেছেন, অভিবাসীদের গ্রেপ্তার ও বহিষ্কারের চলমান প্রক্রিয়াকে এতটাই জোরদার করা দরকার, যা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তবে ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী অভিযানের কট্টর সমর্থক ‘সেন্টার ফর ইমিগ্রেশন স্টাডিজ’-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেড় কোটির অধিক অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার ও বহিষ্কার করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই অবৈধদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখলে (বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা বন্ধ, ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাসহীনদের বাসা ভাড়া দেওয়া বন্ধ, ওয়ার্ক পারমিট নেই এমন অভিবাসীদের টেলিফোনের সিম কার্ড বাতিল, কাজ প্রদানকারীদের জরিমানার পরিমাণ বৃদ্ধি) স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের আগ্রহ বাড়বে। আর এসব ব্যবস্থার কথা বিদ্যমান আইনেই রয়েছে। ‘সেন্টার ফর ইমিগ্রেশন স্টাডিজ’ নামে থিঙ্কট্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ১ কোটি ৫৪ লাখ (১৫.৪ মিলিয়ন) অবৈধ অভিবাসী রয়েছেন। এর ৫০ ভাগের আগমন ঘটেছে গত চার বছর বাইডেনের শাসনামলে। কারণ, সে সময়ে বেআইনিভাবে সীমান্ত অতিক্রমের পরই রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনাকারীদের ডিটেনশন সেন্টারের পরিবর্তে প্যারলে মুক্তির ঘটনা ঘটেছে। বাইডেন প্রশাসনের এ উদারনীতি জানার পর সেন্ট্রাল আমেরিকার দেশগুলো থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মিছিল করে দক্ষিণের সীমানা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছেন। সে সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার রিপাবলিকান পার্টির পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, তারা ক্ষমতায় ফিরলে এ অরাজক পরিস্থিতির অবসান ঘটাবেন। সেই অঙ্গীকারেরই বাস্তবায়ন ঘটাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এদিকে ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ট্রাম্পের কঠোর নীতি অবলম্বনের ফলে গত চার মাসে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে আসার প্রবণতা হ্রাস পেয়েছে এবং কমপক্ষে ৭ লাখ ৭৩ হাজার বিদেশির বেআইনিভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ঘটনা ঘটেনি। মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত কর্মস্থলে অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা কমেছে ১০ লাখের অধিক। তারা নগদ ১ হাজার ডলারসহ ফিরে যাওয়ার টিকিট প্রদানের সরকারি ঘোষণার পর স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র ছেড়েছেন।