কুড়িগ্রামের উলিপুর বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের একটি চরে জেলের জালে আটকা পড়ে বিশাল আকৃতির বার্মিজ প্রজাতির একটি অজগর সাপ। এ সময় স্থানীয়রা সাপটিকে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে। এতে সাপের মাথার সামনের কিছু অংশ থেতলে যায় এবং দাঁতগুলো ভেঙ্গে যায়।
খবর পেয়ে রংপুরের স্নেক রেসকিউ টিমেরসদস্যরা উলিপুর গিয়ে সেনাবাহিনীর এক সদস্যের সহযোগিতায় সাপটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে। উদ্ধার করা সাপ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে রংপুর কারমাইকেল কলেজে এই অজগর সাপ প্রদর্শন করেছে ওয়াইল্ড লাইফ এন্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশ। রবিবার দুপুরে কলেজের লাইব্রেরী ভবনে উদ্ধার হওয়া সাপটি প্রদর্শন করা হয়। ১২ ফুট লম্বা সাপটি দেখতে উৎসুক জনতা ও শিক্ষার্থীরা ভিড় জমান। অনেকে মোবাইল ফোনে ১৩ কেজি ওজনের এ সাপটির ছবি তুলে সংরক্ষণ করে রাখেন। আঘাতপ্রাপ্ত অজগর সাপটিকে সুস্থ্য করে তুলতে স্নেক রেসকিউ টিমের সদস্যরা চিকিৎসা দিয়ে যাচেছন।
ওয়াইল্ড লাইফ এন্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের সদস্যরা জানান, রংপুর চিড়িয়াখানার প্রাণি কর্মকর্তা ডাঃ শাহাদাত হোসেন অজগর সাপটির প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। আঘাত বেশি পাওয়ায় সাপটিকে দীর্ঘমেয়াদে চিকিৎসা দেয়া প্রয়োজন। বর্তমানে স্নেক রেসকিউ টিমের সদস্যরা সাপটির চিকিৎসা দিচ্ছেন।
কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী মারিয়া মীম বলেন, চিড়িয়াখানায় দূর থেকে খাঁচার মধ্যে অজগর সাপ দেখেছি। আজ নিজ ক্যাম্পাসে অজগর দেখে খুব ভাল লাগলো। সাপটি অসুস্থ, তাকে সুস্থ্য করার চেষ্টা করছে উদ্ধারকারীরা। আমাদের ক্যাম্পাসে কয়েকদিন আগে কিছু বিষধর সাপ দেখা দিয়েছিল। পরে সেগুলো উদ্ধারকরে আবার ক্যাম্পাসের ঝোঁপে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সাপ আমাদের পরিবেশের একটি অংশ। তাদের মেরে ফেলা উচিত না।
শিক্ষার্থী আনিছুর রহমান বলেন, বন-জঙ্গল উজার হওয়ার কারণে সাপ লোকালয়ে চলেআসছে। তাই সাপের আবাসভ‚মি আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে। এখানে খাদ্য শৃঙ্খলরক্ষায় সাপের ভ‚মিকা অনেক। আমাদের পরিবেশের জন্য সাপ উপকারি।
ওয়াইল্ড লাইফ এন্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের সংগঠক লিজেন আহমেদ প্রান্ত বলেন, মাছ খাওয়ার জন্য অজগর সাপটি জেলের জালে ঢুকে পড়েছিল। কিন্তুতাকে ধরার পর প্রচুর মারা হয়েছে। সাপটির মাথায় ও মুখে আঘাত রয়েছে। আমরা তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করছি। এখনই বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে কিনা, তা সিদ্ধান্ত নেয় হয়নি। সাপটির দীর্ঘমেয়াদে চিকিৎসা প্রয়োজন। অজরগটি সুস্থ হলে তাকে মিঠাপুকুর ইকোপার্কে ছেড়ে দেয়া হবে। এর আগেও ইকোপার্কে কয়েকটি অজগর ছাড়া হয়েছে।
রংপুর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, সাপটি সুস্থ হলে তার পরিবেশে তাকে ছেড়ে দিতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএম