সিলেটের বিশ্বনাথে টাকা ছিনতাইয়ের জন্যই খুন করা হয় ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী নিপেশ তালুকদারকে। তিনজনের ছিনতাইকারী টিম রেকি করছিলো আগে থেকেই। ঘটনার মূলহোতাই টার্গেট করেন তার পরিচিত ওই ব্যবসায়ীকে। উদ্দেশ্যে ছিলো সুযোগ বুঝে টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়া। সে অনুযায়ী আরও দুই সহযোগী নিয়ে আঁকেন ছক। ঘটনার দিন সন্ধ্যা রাতে পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী ভিকটিমের ফেরার পথের নির্জন স্থানে উৎপাতেন তারা। ভিকটিম ঘটনাস্থলে পৌঁছামাত্র দুই সহযোগীকে মিশন শুরু নির্দেশ দেন পরিকল্পনাকারী। নিজেকে চিনে ফেলার ভয়ে নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন সব। এরমধ্যেই ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে, দুইজনের একজন ছোরা বসায় ব্যবসায়ীর বুকে। এ ঘটনার মাস্টার মাইন্ড এক ছিনতাইকারী গ্রেফতার হলেও এখন অধরা খুনি। এক মাসের অধিক সময় পার হলেও খুনি ও তার অপর সহযোগীর হদিস পাচ্ছেনা পুলিশ।
গেল ২০ এপ্রিল উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়নের বাওনপুর এলাকার পাঁচ পীরের বাজার থেকে ফেরার পথে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী নিপেশ তালুকদার। তিনি সুনামগঞ্জের দিরাই থানার সোলমানপুর গ্রামের বাসিন্দা। স্বপরিবারে বসবাস করতেন সিলেট এসএমপির জালালাবাদ থানার তেমুখী এলাকায়। জীবিকা নির্বাহ করতেন সাইকেলে বাজারে বাজারে পাইকারি ধরে পণ্য বিক্রি করে। এ ঘটনার পরদিন থানায় হত্যা মামলা দেন নিপেশের স্ত্রী লক্ষী দাস। কিন্তু এর আগেই জালালাবাদ থানার টুকের গাঁও গুচ্ছগ্রাম এলাকার জসিম উদ্দিন (৩৬) নামের একজনকে সন্দেহজনক গ্রেফতার করে ৫৪ ধারায় কোর্টে পাঠায় পুলিশ। পরদিন গ্রেফতার করা হয় ঘটনার মূলহোতা ধনপুর গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা কামাল উদ্দিনকে। তিনি জালালাবাদ থানার মোগলাগাঁও ইউনিয়নের আউশা গ্রামের মৃত আবদুল ছাদিকের ছেলে। পরে গেল ১২ মে তিনিসহ আরও দুই জনকে জড়িয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন কামাল। কিন্তু মিশনে অংশ নেয়া খুনি ও তার অপর সহযোগীকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
মামলার বাদী নিপেশের স্ত্রী লক্ষী দাসের অভিযোগ, পুলিশ বলছে বিভিন্ন সময় খুনিদের অবস্থন শনাক্ত করতে পেরেছে। কিন্তু কেন তারা গ্রেফতার হচ্ছে না? এটাই আমার প্রশ্ন।
এ বিষয়ে কথা হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) জহিরুল ইসলাম ভুইয়া লেন, ইতিমধ্যে আমরা ঘটনার আসল পরিকল্পনাকারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। সে আরও দুইজনকে জড়িয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ