বগুড়ার তিন উপজেলার প্রায় ১০ লাখ মানুষের স্বপ্নের সেতুর নির্মাণ কাজ শেষের পথে। এরই মধ্যে হেঁটে চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে করতোয়া নদীর ওপর নির্মিত ফতেহ আলী সেতু। এতে পূর্ব বগুড়ার মানুষের ভোগান্তি অনেকটা কমেছে। তবে এখনই সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। বগুড়া সড়ক বিভাগ জানিয়েছে, চলতি বছরের জুনের শেষ দিকে সেতুটি উদ্বোধন করা হবে। জানা যায়, ২০২৩ সালের মে মাসে শুরু হয় বগুড়া ফতেহ আলী সেতু নির্মাণ। শহরের পূর্ব প্রান্ত ও পূর্ব বগুড়ার তিন উপজেলার বাসিন্দাদের চলাচল সুগম করতে নেওয়া হয় এ প্রকল্প। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের মে মাসের মধ্যে। কয়েক দফা সময় বাড়িয়েও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেননি। পুরোপুরি কাজ শেষ না হলেও মানুষের সুবিধার জন্য খুলে দেওয়া হাঁটার লেন। হাজার হাজার মানুষ হেঁটে নদী পারাপার হচ্ছেন। আগে মানুষের চলার জন্য পাশ দিয়ে অস্থায়ীভাবে সাঁকো তৈরি করা হয়েছিল। যেটি ছিল অনেকাটা ঝুঁকিপূর্ণ। সেতুটি উদ্বোধন হলে তিন উপজেলার মানুষের দুর্ভোগ থাকবে না। উৎপাদিত কৃষিপণ্য সময়মতো শহরে আনতে পারবেন। পাবেন পণ্যের ন্যায্যমূল। ১৯৬২ সালে নির্মিত ফতেহ আলী সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ এটি ২০১৮ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। তার পরও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর ওপর দিয়েই যানবাহন চলাচল করে আসছিল। ২০২৩ সালে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। সড়ক ও সেতু বিভাগ জানায়, ৬৯ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১২.৩ মিটার প্রস্থ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। ঠিকাদার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেননি। চলতি বছরের জুনে নির্মাণ শেষ হবে। এটি গাবতলী, সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলার মানুষের স্বপ্নের সেতু।
সরেজমিন দেখা যায়, সেতুর দুই পাশে এখনো অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ হয়নি। কোনোমতে বিটবালু ফেলে হাঁটার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেতুর ওপর শ্রমিকরা নির্মাণসামগ্রী রেখে ফুটপাত ও রেলিংসহ অন্যান্য কাজ করছেন। মাঝখানে জায়গা খালি করে হেঁটে পারাপারের করা হয়েছে ব্যবস্থা। গাবতলী উপজেলার বাসিন্দা নায়েব আলী জানান, আগে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে শহরে আসতে হতো। হেঁটে চলাচলের জন্য সেতুটি খুলে দেওয়ায় সময় এবং খচর দুটোই কমেছে। বগুড়া সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল মনসুর আহমেদ জানান, সেতুর ফুটপাত, রেলিং ও অ্যাপ্রোচ সড়কসহ কিছু কাজ বাকি রয়েছে।