দেশের অন্যতম ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান জেমকন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা, আধুনিক সাংবাদিকতার পথপ্রদর্শক, দৈনিক আজকের কাগজের প্রকাশক ও সম্পাদক, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক কাজী শাহেদ আহমেদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার। ২০২৩ সালের ২৮ আগস্ট তিনি ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি ১৯৪০ সালের ৭ নভেম্বর যশোরের পুরাতন কসবার কাজীপাড়ায় জন্ম গ্রহণ করেন। তৎকালীন পাকিস্তানের লাহোর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও ইউনিভার্সিটিতে তিনি উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। সেনাবাহিনীতে যোগদানের পর তাঁর প্রথম পোস্টিং ছিল মারি ও আজাদ কাশ্মীরে। পরে ১৯৬৭ সালের শেষের দিকে তিনি রিসালপুর ইয়াং ইঞ্জিনিয়ার্স অফিসার্স কোর্সে যোগদান করেন। তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির প্রতিষ্ঠাকালীন প্লাটুন কমান্ডারদের একজন। ১৯৬৯ সালের ২ জানুয়ারি আমিনা আহমেদের সঙ্গে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। পারিবারিক জীবনে তাঁর তিন সন্তান কাজী নাবিল আহমেদ, কাজী আনিস আহমেদ ও কাজী ইনাম আহমেদ স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় তিনি সপরিবারের প্রিজনার অব ওয়ার ক্যাম্পে বন্দি ছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে তাঁর অবদান অসামান্য।
তিনি কুমিল্লায় বাংলাদেশ লিমিটারি একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৯ সালে ক্যাসেল কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লি. প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এরপর তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে একে একে প্রতিষ্ঠা করেন জেমিনী সি ফুড, দেশের প্রথম ও একমাত্র অর্গানিক চা-বাগান কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেট লি., মীনা বাজার, জেমকন লি., জেমকন ইঞ্জিনিয়ারিং, ভোম জুট লি.। চিরায়ত এক জ্যোতির্ময় বিশ্বকে ধারণ করে ২০০২ সালে তিনি গড়ে তোলেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ।
সমাজসেবা এবং মানবতায় তাঁর অবদান হিসেবে তিনি যশোরে নিজ অর্থায়নে স্থাপন করেন সন্দীপন এতিমখানা। নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন কাজী শাহেদ ফাউন্ডেশন যা পঞ্চগড়ের অসহায়, হতদরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষদের জীবনমান উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছে আজও। তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশজুড়ে রয়েছে লেখক সত্তা। তাঁর লেখা প্রবন্ধগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘আমার লেখা, ঘরে আগুন লেগেছে’। তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ হলো জীবনের শিলালিপি। বহুল পঠিত তাঁর উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে ‘ভৈরব’ ‘পাশা’ ‘অপেক্ষা’ ‘দাঁতে কাঁটা পেনসিল’ ‘শিশু ও তাপসের কথা ও কাহিনী’।