জনবলসংকট, সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব, প্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ না থাকায় ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে চলছে রাজশাহীর কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এলাকাবাসী আস্থা হারানোয় দিনদিন রোগীশূন্য হয়ে পড়ছে।
তবে রাজশাহীর সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মাহবুবা খাতুন জানান, সাত মাস ধরে ক্লিনিকের হেলথ প্রোভাইডারদের বেতন বন্ধ আছে। এ কারণে হয়তো অনেকের কাজের আগ্রহ কমে গেছে। তবে ক্লিনিকগুলো চলমান আছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের যাত্রা হয় ১৯৯৮ সালে। সে বছর প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে ১০ হাজার ৭৩২টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়। বিএনপি ক্ষমতায় এসে ২০০১ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০০৯ সালে ‘রিভাইটালাইজেশন অব কমিউনিটি হেলথ কেয়ার ইনিশিয়েটিভস ইন বাংলাদেশ (কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প)’ শীর্ষক পাঁচ বছর মেয়াদি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। দেওয়া হয় লোকবল নিয়োগ। রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যানুযায়ী, জেলার নয়টি উপজেলায় স্থাপন করা হয় ২৩২টি কমিউনিটি ক্লিনিক। তবে শুরুর দিকে ক্লিনিকগুলো এলাকাবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করলেও পরে তা অন্ধকারে থেকে যায়। পবা উপজেলায় ৩২, তানোরে ১৯, মোহনপুরে ১৯, গোদাগাড়ীতে ৩৪, দুর্গাপুরে ১৯, পুঠিয়ায় ২৮, চারঘাটে ২৩, বাঘায় ২০, বাগমারায় ২০টি কমিউনিটি ক্লিনিক আছে। এসব ক্লিনিকের হেলথ প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি) রোগীদের প্রাথমিক সেবা প্রদান করেন। ক্লিনিকগুলো থেকে মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য পরিচর্যা, শিশু রোগের সমন্বিত চিকিৎসাসেবা, প্রজননস্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনাসংক্রান্ত শিক্ষা ও পরামর্শ, সাধারণ রোগ ও জখমের চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়।
চারঘাটের ২৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক সময়সূচি অনুযায়ী চলছে না। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা তা মানছেন না। বেশির ভাগ ক্লিনিক সকাল ১০টার পর খোলে, বন্ধ হয় ১২টার মধ্যে। ক্লিনিকগুলোয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও পরিদর্শকদের নিয়মিত পরিদর্শনের কথা থাকলেও তাঁরা সে দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করেন না। এভাবে খেয়ালখুশিমতো চলছে গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা।
তানোর, গোদাগাড়ীর বিভিন্ন ক্লিনিক ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ সময়মতো খোলা হচ্ছে না। কোনো কোনোটি অনেক দেরিতে খোলা হলেও একজন হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট দিয়ে চালানো হচ্ছে।
পবা উপজেলার ঘিপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্যসহকারী হুমায়ূন রোগীশূন্য ক্লিনিকটির ভিতরে বসে আছেন।