বয়স মাত্র ২ মাস। সুঠাম দেহ। লম্বা সুর। গুঁটি গুঁটি পায়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বন জঙ্গল। শুধু বন জঙ্গল নয়, মায়ের সঙ্গে পাড়ি দিয়েছে রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদও। বলছি, পাহাড়ে সম্প্রতি জন্ম নেওয়া এক গোলাপি রঙের বন্যহাতির শাবকের কথা। যেমন তার আচরণ। তেমন তার জনপ্রিয়তা।
অন্য হাতির শরীরের রঙের তুলনায় ভিন্নতা থাকায় পাহাড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছে এ হাতি শাবক। এ গোলাপি শাবকটি একনজর দেখতে পাহাড়ে ভিড় করছে দূর দূরান্তের মানুষ। কেউ যাচ্ছে ড্রোন নিয়ে। কেউ যাচ্ছে ক্যামেরা। কৌতূহলী মানুষের ভিড় দেখে এ শাবকটির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি লংগদু উপজেলা বরুনাছড়ি, কালাপাকুজ্যা, ভাসান্য আদাম, রাঙ্গীপাড়া, গুলসাখালী, বগাচত্বর এসব এলাকায় বসবাস করে একটি বন্যহাতির পাল। এক একটি পালে রয়েছে ১৬টি হাতি। তাদের মধ্যে একটি হাতি শাবকের শরীরের রঙের পরিবর্তন এসেছে। অন্যান্য হাতিগুলো দেখতে ধূসর ও কালচে বাদামি রঙের হলেও সদ্য জন্ম নেওয়া এ হাতির শরীরের রং হালকা গোলাপি। তাই মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই।
জানা গেছে, রাঙামাটি লংগদু উপজেলা থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে বন্ধুদের সঙ্গে শহরের ফিরছিলেন স্থানীয় মো. জাবেদ উদ্দীন। হঠাৎ তার চোখে পড়ে কাপ্তাই হ্রদ পাড়ি দিচ্ছে বন্যহাতির দল। বিস্ময়কর এমন দৃশ্য ধারণ করে তার মোবাইলে। পরে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের প্রোফাইলে ভিডিওটি প্রচার করেন। ভিডিওটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য হাতির ভিডিও ধারণ করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় রাঙামাটির বরুনাছড়ি ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা ও হাতি সুরক্ষা দলের সদস্য মো. জাহাঙ্গীরকে। তার মোবাইলেও দেখা যায় হাতির পালের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছে এক গোলাপি হাতি শাবক।
এ প্রসঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগের কর্মকর্তা মো. হোসেন বলেন, 'আমরা খুবই আনন্দিত এমন একটি হাতি শাবকের জন্ম দেখে। এটি বাংলাদেশের মধ্যে একটি বিরল ঘটনা। পাহাড়ে এ হাতি সুরক্ষা করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। হাতির নিরাপত্তার জন্য আলাদা দল গঠন করা হয়েছে। রাঙামাটির উত্তর বনবিভাগের অধীনে যে হাতিগুলো রয়েছে তাদের মধ্যে একটি হাতিও কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। প্রকৃতির সঙ্গে হাতিগুলো বেড়ে উঠছে।
বিডি প্রতিদিন/মুসা