সরিষা, লিচু, কালোজিরা থেকে মৌ-বাক্স বসিয়ে মধু আহরণ করা গেলেও মিষ্টি কুমড়ার খেত থেকে মধু সংগ্রহ করে সবার দৃষ্টি কেড়েছেন মৌ খামারি মোসাদ্দেক হোসেন। তিনি মিষ্টি কুমড়ার খেতে বসানো ১০০টি মৌ-বাক্স থেকে প্রায় ১০ মণ মিষ্টি কুমড়া ফুলের মধু আশা করছেন। এ মধুর বাজারমূল্য প্রতি কেজি ৬০০-৭০০ টাকা। মিষ্টি কুমড়ার খেতে মৌ-বাক্স বসালে মৌ-কলোনিগুলোর সুরক্ষা ও বিকাশে ভূমিকা রাখে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো মধুও পাওয়া যায়। দিনাজপুরের বীরগঞ্জের শেষ সীমানায় ভুল্লী বাজারের সবদল এলাকায় বসানো হয়েছে এই মৌ-বাক্স। নদীর চর, আম ও লিচু বাগানে দিন দিন সাথি ফসল হিসেবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে মিষ্টি কুমড়া চাষ। আলুর খেতে আলুর সঙ্গে মিষ্টি কুমড়া রোপণ করে আলু উত্তোলনের পর স্বল্প সময়ে একই মাঠে দ্বৈত ফসলের চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে রোপণ করা হয় মিষ্টি কুমড়ার বীজ। এপ্রিলে আসে ফুল। এপ্রিল-মে মাসজুড়ে মিষ্টি কুমড়ায় ভরে ওঠে মাঠ। মিষ্টি কুমড়ার চাষ লাভজনক হওয়ায় সাথি ফসল হিসেবে আম লিচুর বাগানে মৃদু ছায়ায়ও মিষ্টি কুমড়ার চাষ বাড়ছে।
কৃষকরা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে দেড় থেকে দু’শ মণ এবং প্রতি একরে ছয়শ মণ মিষ্টি কুমড়া পাওয়া যায়। মিষ্টি কুমড়ার চাষের সঙ্গে মিষ্টি কুমড়ার মধু উৎপাদন জনপ্রিয় হচ্ছে। মিষ্টি কুমড়া চাষিরা ফুলের পরাগায়নের জন্য মিষ্টি কুমড়ার খেতে মৌ-বাক্স ভাড়া নিচ্ছেন। মৌ খামারগুলো বাণিজ্যিকভাবে মধু উৎপাদনে কাজ করছে মিষ্টি কুমড়ার খেতগুলোতে। এতে ভালো ফলনও পাওয়া যাবে, অন্যদিকে মধুও পাওয়া যাবে। লাভবান হবে মৌ খামারিসহ কৃষকরাও। দিনাজপুরের মৌ খামারি এমবিএফ হানির স্বত্বাধিকারী মোসাদ্দেক হোসেন জানান, মিষ্টি কুমড়ার মধু একটি সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও সুঘ্রাণযুক্ত মধু। বাজারে এটির ভালো চাহিদা তৈরি করছে। মিষ্টি কুমড়ার চাষ বাড়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দিনাজপুর কৃষি অঞ্চলে মৌ খামার স্থাপনের হারও বাড়ছে।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দিনাজপুর অঞ্চলের (দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়) উপপরিচালক গোলাম সারোয়ার জানান, মৌমাছির খামার স্থাপনে পরাগায়ন বাড়ছে শতকরা ২০-৩০ ভাগ বেশি। ফলে মিষ্টি কুমড়ার ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দিনাজপুরের বীরগঞ্জ, খানসামাসহ দিনাজপুর কৃষি অঞ্চলের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে এর ফলন ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই