দেশের সেরা দিনাজপুরের লিচু। আর এই লিচুর রাজ্যে গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ছেয়ে গেছে লিচুর গুটি। অন্যদিকে এই লিচুর গুটি ধরে রাখতে চলছে পরিচর্যা। এরই মধ্যে বাগানের ফলের বেচাকেনা চলছে। বিভিন্ন অঞ্চলের অনেক ব্যবসায়ী ঘুরে যাচ্ছেন বিভিন্ন বাগান। এখন পর্যন্ত তেমন কোন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় পড়তে হয়নি বাগানীদের। তবে লিচু চাষীরা বলছেন, একবার ভালো লিচু হলে পরের বছর একটু কম হয় লিচু। এরপরেও ভালোই লাভের আশা বাগানীদের।
এখন দিনাজপুরের বিভিন্ন বাগানে প্রতিটি বাড়ির বসতভিটায় বা আঙ্গিনার লিচু গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে লিচুর গুটি। প্রথম দফায় লিচু বাগান বেচা হয়ে গেছে। আরেকটা হবে লিচু পাক ধরার সময়। আগামী মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেশের সেরা লিচু বাজারে আসবে বলছেন চাষীরা।
দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলাতে কম বেশি লিচুর চাষ হয়। বেশি চাষ হয় সদর উপজেলার মাসিমপুর, উলিপুর, আউলিয়াপুর, মহব্বতপুর, বিরলের মাধববাটি, করলা, রবিপুর, রাজারামপুর, মহেশপুর, বটহাট এবং চিরিরবন্দর, বিরল, বীরগঞ্জ, খানসামা উপজেলায়।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে এবার হাজার কোটি টাকার লিচু উৎপাদন হবে। তবে বেসরকারি হিসেবে লিচু উৎপাদন হবে প্রায় দ্বিগুণ।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিভিন্ন জাতের লিচুর মধ্যে বেদানা, বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না-থ্রি, কাঁঠালি, মোজাফফরপুরী লিচু এখন সবার কাছেই প্রিয়। বাজারে প্রথম আসে মাদ্রাজী লিচু। এরপর কাঁঠালি, মোজাফফরপুরী, বোম্বাই। আর শেষের দিকে বেদানা ও চায়না থ্রি লিচু বাজারে নামবে।
বিরল উপজেলার ধামইরের কাশিডাঙ্গা গ্রামের লিচু বাগান মালিক বেলাল হোসেন বলেন, আমার ৫ একরের বাগানে গতবারের চেয়ে কম লিচু ধরেছে। এরপরেও এই বাগানটি ফল বিক্রি করেছি ২৪ লাখ টাকায়। গতবার এটি ২২ লাখে বিক্রি হয়েছিল।
বিরলের ধামইর ইউপির লিচু বাগান ক্রেতা শাহিন হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত ফলন ভালোই আছে। এখন চলছে পরিচর্যা। দেওয়া হচ্ছে কীটনাশক। এটি ফলন পাকার পূর্ব পর্যন্ত দিতে হয়। আশা করছি ভালোই লাভ হবে। তিনটি বাগান কিনেছি। একটি বাগান ২৪ লাখ টাকায় আগামী তিন মওসুমের জন্য কিনেছি। এই বাগান থেকে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা লাভ হবে আশা করছি।
উল্লেখ্য, দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কোন সময় কীটনাশক ব্যবহার করা উচিত। চলতি বছরে দিনাজপুর জেলায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে লিচু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। ওজনের আকারে যা ৩৫ হাজার টন। বাজার মূল্য প্রায় হাজার কোটি টাকারও বেশি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল