শুধু মানুষ নয়, প্রাণীরাও স্বজন হারানো শোক পালন করে। অর্কা বা ঘাতক তিমি থেকে শুরু করে কাক পর্যন্ত অনেক পশুপাখিই তাদের সন্তান ও সঙ্গীর মৃত্যুতে শোকে কাতর হয়ে পড়ে। স্বজন হারানো বেদনা ফুটে ওঠে তাদের আচরণে, জীবনযাপনে। সন্তান মারা গেলে তার মৃতদেহ দীর্ঘদিন সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেড়ায় কিলার হোয়েল (এক প্রকার তিমি)।
২০১৮ সালে নবজাতকের মৃত্যুর পর টানা ১৭ দিন ধরে তাকে ঠেলে নিয়ে শোক পালন করতে দেখা যায় এক তিমিকে। ২০২১ সালে এডিনবার্গের চিড়িয়াখানার এক রিপোর্ট অনুযায়ী সেখানকার এক শিম্পাঞ্জি মৃত শিশুর জন্ম দেয়। লিয়ান নামে ওই শিম্পাঞ্জি ক্ষতি মেনে নিতে পারেনি, সে তার মৃত সন্তানকে ছাড়তেও চায়নি। চিড়িয়াখানার ভিতরেই সন্তানের মৃতদেহ কোলে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। স্তন্যপায়ী প্রাণী ডলফিন ও বানরকেও একই ধরনের আচরণ করতে দেখা যায়।
স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে গ্রেফায়ার্স ববি নামে টেরিয়ার প্রজাতির এক কুকুর তার মালিকের কবর রক্ষা করে ১৪ বছর কাটিয়েছিল। জাপানে মালিকের মৃত্যুর পরও দিনের পর দিন তার জন্য রেলস্টেশনে অপেক্ষা করত আকিতা প্রজাতির কুকুর হাচিকো। একইভাবে সি-লায়ন, বিড়াল, বানর ও খরগোশরা প্রিয়জনের মৃত্যুর পর কান্নাকাটি করে। ঘোড়ার পালের কোনো সদস্যের মৃত্যু হলে তার কবরের চারপাশে অন্য ঘোড়ারা জড়ো হয়ে শোক পালন করে। স্বজন হারালে রীতিমতো কান্নায় ভেঙে পড়ে হাতি।
শুধু পশু নয়, পাখিরাও দুঃখ পায়। অস্ট্রিয়ান প্রাণিবিদ কনরাড লরেঞ্জ বর্ণনা করেছেন, সঙ্গী হারানোর পর গ্রেল্যাগ গিজ বা ধূসর রাজহাঁসের মধ্যে যে আচরণ দেখা যায় তা অনেকটা ‘শোকসন্তপ্ত মানুষের আচরণের মতোই’। হতাশায় এই রাজহাঁসদের মাথা নুয়িয়ে রাখতে দেখা যায়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই