ভারত-পাকিস্তানের মাঝে চলছে টানটান উত্তেজনা। প্রতিনিয়ত পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, হামলা পাল্টা-হামলা ও হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে দুই দেশের মিডিয়ায়। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে হঠাৎ হামলার পর থেকেই পাল্টা আঘাতের আতঙ্কে ভুগছে দিল্লি। পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে ভারতের ২১টি বিমানবন্দর আগামী ১০ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আর গতকাল বুধবার ভারতে ৪০০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়।
বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে ভারতের সর্বদলীয় বৈঠকে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং দাবি করেছেন, পাকিস্তানে সামরিক হামলায় শতাধিক ‘সন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে। একইসঙ্গে পাকিস্তান পাল্টা হামলা করলে আরও জোরালোভাবে ভারত প্রতিক্রিয়া জানাবে বলেও রাজনাথ সতর্ক করেছেন।
এছাড়া এদিন লাহোরের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম উড়িয়ে দেওয়ার দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে ভারত। তবে ভারত কীভাবে এই সিস্টেমগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি ওই বিবৃতিতে। এর আগে পাকিস্তান দাবি করে, তারা গত রাত থেকে ইসরায়েলের তৈরি ২৫টি ভারতীয় ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে। সব মিলিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা নিয়ে চিন্তিত বিশ্ব। তবে এ যুদ্ধ যে বাঁধবে তা আগেই নাকি আন্দাজ করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় এমনই আশঙ্কা করা হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক ওই গবেষণার বরাত দিয়ে ওই সময় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, “কাশ্মীর বিরোধের জের ধরে ভারত ও পাকিস্তানের পারমাণবিক যুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি মানুষের প্রাণহানি ঘটবে। তখন নাকি গবেষকরা বলেছিলেন, এর ফলে জলবায়ুর ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়বে তাতে অনাহারে মারা যাবে আরো বহু কোটি মানুষ। এরকম এক বিপর্যয়ের ধারণা দিতে গিয়ে তখন আরও বলা হয়েছিল, ২০২৫ সালে দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর এই দুটো দেশের মধ্যে যুদ্ধ লেগে যেতে পারে।”
সেই গবেষণার সূত্র ধরে আজ বৃহস্পতিবার ভারতীয় গণমাধ্যম জি নিউজ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের বাস্তবতা যেন সেটিকেই প্রমাণ করে দিচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনা সীমারেখা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েন, কাশ্মীর ইস্যু ও সীমান্ত সংঘর্ষ- সবই যেন ক্রমাগত ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে সেই ভয়াবহ ভবিষ্যতের দিকে। তাই এখন প্রশ্ন উঠেছে সত্যিই কি পরমাণু যুদ্ধে জড়াবে ভারত-পাকিস্তান? যদিও এ নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের দায়িত্বশীল কোনো পক্ষই কোনো মন্তব্য করেনি।
সূত্র : বিবিসি, জি নিউজ ও ইকোনমিক টাইমস।
বিডি-প্রতিদিন/শআ